Dhaka ০১:৫৪ পূর্বাহ্ন, রবিবার, ২০ জুলাই ২০২৫, ৪ শ্রাবণ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ
শিরোনামঃ
সড়কে ঝরলো প্রাণ, ট্রলির নিচে পিষ্ট হয়ে বৃদ্ধের মৃত্যু জামায়াত আমীরকে দেখতে হাসপাতালে খেলাফত মজলিসের শীর্ষ নেতৃবৃন্দ জামায়াত আমীরকে দেখতে হাসপাতালে ছুটে গেলেন ইসলামী আন্দোলনের নেতারা চিকিৎসা নয়, আগে জাতির কথা— ড.শফিকুর রহমান শহীদদের স্মরণে গণতান্ত্রিক আন্দোলনের শপথ নিলো নরসিংদী বিএনপি দীর্ঘ ৫ ঘন্টা পর অবরোধ প্রত্যাহার করলেন ইবি শিক্ষার্থীরা বগুড়ায় পুত্রবধূ ও শ্বশুর হত্যাকাণ্ডের প্রধান আসামি র‍্যাবের জালে OHCHR মিশন আসছে বাংলাদেশে:জাতিসংঘের সঙ্গে তিন বছরের চুক্তি তারেক রহমানকে কটাক্ষের প্রতিবাদে নরসিংদীতে যুবদলের বিক্ষোভ ও হুঁশিয়ারি সাজিদের মৃত্যুর সুষ্ঠু তদন্ত দাবিতে শিবিরের টর্চ লাইট মিছিল
নোটিশঃ
প্রিয়" পাঠকগণ", "শুভাকাঙ্ক্ষী" ও প্রতিনিধিদের উদ্দেশ্যে জানানো যাচ্ছে:- কিছুদিন যাবত কিছু প্রতারক চক্র দৈনিক ক্রাইম তালাশ এর নাম ব্যবহার করে প্রতিনিধি নিয়োগ ও বিভিন্ন প্রলোভন দেখিয়ে অর্থ হাতিয়ে নিচ্ছে। তার সাথে একটি সক্রিয় চক্র সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে বিভিন্ন গ্রুপ বিভিন্ন ভাবে "দৈনিক ক্রাইম তালাশ"কে হেয় প্রতিপন্ন করার চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে। মনে রাখবেন "দৈনিক ক্রাইম তালাশ" এর অফিসিয়াল পেজ বা নিম্নের দুটি নাম্বার ব্যাতিত কোন রকম লেনদেনে জড়াবেন না। মোবাইল: 01867329107 হটলাইন: 01935355252

একজন দাস থেকে জান্নাতের ঘোষক:হজরত বেলাল (রাঃ)-এর অবিস্মরণীয় জীবন

  • Reporter Name
  • Update Time : ১২:৩৯:৩৩ পূর্বাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ১২ জুন ২০২৫
  • ৩৫ Time View

ইসলামিক ডেস্ক◾

 

ইতিহাসে এমন কিছু নাম আছে যাদের জীবন আলোকবর্তিকার মতো জ্বলজ্বলে হয়ে ওঠে যুগে যুগে। হজরত বেলাল (রাঃ) — তেমনই একজন সাহাবি। আফ্রিকার কৃষ্ণাঙ্গ দাস থেকে তিনি হয়ে উঠেছিলেন ইসলামের প্রথম মুয়াজ্জিন এবং রাসূলুল্লাহ (সা.)-এর অন্যতম ঘনিষ্ঠ সাহচর্যে থাকা সাহাবি।

 

বেলাল (রাঃ) ছিলেন একজন ইথিওপীয় দাস, যিনি মক্কার কুরাইশদের হাতে দীর্ঘদিন শারীরিক ও মানসিক নির্যাতনের শিকার হন। ইসলাম গ্রহণ করার পর তিনি নিজ মালিক উমাইয়ার হাতে নিক্ষিপ্ত হন ধুলোয়, পাথরের নিচে। তখনও তাঁর মুখে উচ্চারিত হতো — “আহাদ, আহাদ”। অর্থাৎ, “তিনি এক, তিনি এক”।

 

এই একটি শব্দই যেন ছিল তাঁর মুক্তির চাবিকাঠি।

 

হজরত আবু বকর (রাঃ) এই অবর্ণনীয় অত্যাচার থেকে তাঁকে মুক্ত করে আনেন। আর রাসূলুল্লাহ (সা.) তাঁকে পবিত্র দায়িত্ব দেন — মুয়াজ্জিন হিসেবে প্রতিদিন আযান দেওয়ার।

 

তার আযানে ছিল অশ্রু, আকুতি আর এক গভীর আধ্যাত্মিক অনুভব। বলা হয়, রাসূল (সা.) জান্নাতে তাঁর পায়ের ধ্বনি শুনেছিলেন—এটিই ছিল এক অনন্য মর্যাদার নিদর্শন।

 

নবীজির ইন্তিকালের পর বেলাল (রাঃ) আর আযান দেননি, কারণ কান্নায় তিনি “আশহাদু আন্না মুহাম্মাদার রাসূলুল্লাহ” বলতে পারতেন না। তাঁর কণ্ঠ স্তব্ধ হয়ে যেত ভালোবাসায়।

 

একবার, নবীজির (সা.) ঘুমে দেখা দিয়ে তাঁর কাছে অনুরোধ করেন—”আমার কাছে চলে এসো বেলাল”। সেই ডাকে সাড়া দিয়ে বেলাল (রাঃ) মদিনায় এসে আবার আযান দেন। মদিনা কাঁদে সেই দিনে। পুরনো দিনের মুয়াজ্জিন, সেই চিরচেনা কণ্ঠ…।

 

হজরত বেলাল (রাঃ)-এর জীবন এক উদাহরণ—ধর্ম, জাতি, গায়ের রঙ কিংবা সামাজিক অবস্থান নয়—আল্লাহর কাছে মর্যাদা নির্ধারিত হয় তাকওয়ার ভিত্তিতে।

 

আজ যখন বিশ্বজুড়ে মানুষ বিভক্ত বর্ণে, গোত্রে ও শ্রেণিতে, তখন বেলাল (রাঃ)-এর জীবনী আমাদের শিক্ষা দেয় সাম্য, সাহস এবং আল্লাহর প্রতি নির্ভরতার অসাধারণ পাঠ।

 

এই সময়ের তরুণ প্রজন্ম যদি সাহস, আদর্শ ও আত্মত্যাগ শিখতে চায়, তবে হজরত বেলাল (রাঃ)-এর জীবন হতে পারে একটি অদ্বিতীয় অনুপ্রেরণা।

Tag :

Write Your Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Save Your Email and Others Information

About Author Information

Popular Post

সড়কে ঝরলো প্রাণ, ট্রলির নিচে পিষ্ট হয়ে বৃদ্ধের মৃত্যু

একজন দাস থেকে জান্নাতের ঘোষক:হজরত বেলাল (রাঃ)-এর অবিস্মরণীয় জীবন

Update Time : ১২:৩৯:৩৩ পূর্বাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ১২ জুন ২০২৫

ইসলামিক ডেস্ক◾

 

ইতিহাসে এমন কিছু নাম আছে যাদের জীবন আলোকবর্তিকার মতো জ্বলজ্বলে হয়ে ওঠে যুগে যুগে। হজরত বেলাল (রাঃ) — তেমনই একজন সাহাবি। আফ্রিকার কৃষ্ণাঙ্গ দাস থেকে তিনি হয়ে উঠেছিলেন ইসলামের প্রথম মুয়াজ্জিন এবং রাসূলুল্লাহ (সা.)-এর অন্যতম ঘনিষ্ঠ সাহচর্যে থাকা সাহাবি।

 

বেলাল (রাঃ) ছিলেন একজন ইথিওপীয় দাস, যিনি মক্কার কুরাইশদের হাতে দীর্ঘদিন শারীরিক ও মানসিক নির্যাতনের শিকার হন। ইসলাম গ্রহণ করার পর তিনি নিজ মালিক উমাইয়ার হাতে নিক্ষিপ্ত হন ধুলোয়, পাথরের নিচে। তখনও তাঁর মুখে উচ্চারিত হতো — “আহাদ, আহাদ”। অর্থাৎ, “তিনি এক, তিনি এক”।

 

এই একটি শব্দই যেন ছিল তাঁর মুক্তির চাবিকাঠি।

 

হজরত আবু বকর (রাঃ) এই অবর্ণনীয় অত্যাচার থেকে তাঁকে মুক্ত করে আনেন। আর রাসূলুল্লাহ (সা.) তাঁকে পবিত্র দায়িত্ব দেন — মুয়াজ্জিন হিসেবে প্রতিদিন আযান দেওয়ার।

 

তার আযানে ছিল অশ্রু, আকুতি আর এক গভীর আধ্যাত্মিক অনুভব। বলা হয়, রাসূল (সা.) জান্নাতে তাঁর পায়ের ধ্বনি শুনেছিলেন—এটিই ছিল এক অনন্য মর্যাদার নিদর্শন।

 

নবীজির ইন্তিকালের পর বেলাল (রাঃ) আর আযান দেননি, কারণ কান্নায় তিনি “আশহাদু আন্না মুহাম্মাদার রাসূলুল্লাহ” বলতে পারতেন না। তাঁর কণ্ঠ স্তব্ধ হয়ে যেত ভালোবাসায়।

 

একবার, নবীজির (সা.) ঘুমে দেখা দিয়ে তাঁর কাছে অনুরোধ করেন—”আমার কাছে চলে এসো বেলাল”। সেই ডাকে সাড়া দিয়ে বেলাল (রাঃ) মদিনায় এসে আবার আযান দেন। মদিনা কাঁদে সেই দিনে। পুরনো দিনের মুয়াজ্জিন, সেই চিরচেনা কণ্ঠ…।

 

হজরত বেলাল (রাঃ)-এর জীবন এক উদাহরণ—ধর্ম, জাতি, গায়ের রঙ কিংবা সামাজিক অবস্থান নয়—আল্লাহর কাছে মর্যাদা নির্ধারিত হয় তাকওয়ার ভিত্তিতে।

 

আজ যখন বিশ্বজুড়ে মানুষ বিভক্ত বর্ণে, গোত্রে ও শ্রেণিতে, তখন বেলাল (রাঃ)-এর জীবনী আমাদের শিক্ষা দেয় সাম্য, সাহস এবং আল্লাহর প্রতি নির্ভরতার অসাধারণ পাঠ।

 

এই সময়ের তরুণ প্রজন্ম যদি সাহস, আদর্শ ও আত্মত্যাগ শিখতে চায়, তবে হজরত বেলাল (রাঃ)-এর জীবন হতে পারে একটি অদ্বিতীয় অনুপ্রেরণা।