এস এম নুরুল আমিন,কুড়িগ্রাম প্রতিনিধি: কুড়িগ্রাম জেলার রৌমারী উপজেলার ঝুনকিরচর এলাকার বাসিন্দা মোঃ বরকত আলীর গত ৩০শে সেপ্টেম্বর ২০২৩ইং তারিখ নিখোঁজ হওয়ায় গত ০৫ই অক্টোবর ২০২৩ইং তারিখ রৌমারী থানায় জিডি করেন।
নিখোজ জিডি হওয়ার পর উক্ত জিডির তদন্তকারী কর্মকর্তা এসআই নিরস্ত্র রাসেল আহম্মেদ গোপন সংবাদের ভিত্তিতে গত ১৬ই অক্টোবর ২০২৩ইং তারিখ আনুমানিক দুপুর ১.০০ ঘটিকার সময় সঙ্গীয় অফিসার ফোর্সসহ গাজীপুর জেলার জয়দেবপুর থানার ঢাকা-ময়মনসিংহ মহাসড়কের হোতাপাড়া ফুটওভার ব্রিজের নিকট হতে বিশেষ উদ্ধার অভিযান পরিচালনা করে নিখোঁজ হওয়া মোছাঃ আরিফা খাতুনকে উদ্ধার করেন।
পরবর্তীতে আরিফা খাতুন জানায় যে, বাড়িতে ঝগড়া-ঝাটি হওয়ায় এবং স্বামী ও স্বামীর বাড়ির লোকজনের সাথে কাজ-কর্ম নিয়ে ঝগড়া-ঝাটি হওয়ায় সে গাজীপুরে গিয়ে গার্মেন্টেস এ কাজ করার সিদ্ধান্ত নেয়।
এরপর আরিফা খাতুন গত ৩০শে অক্টোবর ২০২৩ইং তারিখে রৌমারী হতে বাসে করে একা একাই গাজীপুরের মাওনা চৌরাস্তায় গিয়ে পৌঁছান।
সে সেখানে নেমে কিছুক্ষন দাড়িয়ে থাকে এবং মাওনা চৌরাস্তায় গাজিপুর শ্রীপুরের মোছাঃ মাকসুদা বেগম এর সাথে তার পরিচয় হলে মাকসুদা নিখোঁজ ভিকটিম আরিফা খাতুন কে থাকা খাওয়ার ব্যাবস্থা করে দেয়।
মাকসুদা আরিফাকে গার্মেন্টস এ চাকুরীর ব্যাবস্থা করে দেয় এবং আরিফাকে জর্ডানে গিয়ে উন্নত জীবন যাপন করার জন্য প্রলুব্ধ করে।
আরিফাও সে ফাঁদে পা দেয় এবং পাসপোর্ট করার আবেদন করে জর্ডান যাওয়ার প্রস্ততি নেয়।
তদন্তকারী কর্মকর্তা অনুসন্ধান করে জানতে পারে মাকসুদা নারী পাচারকারী চক্রের সক্রিয় সদস্য।
পাচারকারী চক্রের লোভনীয় ফাঁদে পড়ে ভিকটিম আরিফা খাতুন ১৭ দিন পর্যন্ত তার ০৩ বছরের ফুটফুটে ছেলে সন্তান,স্বামী, বাপ মা সবার কথা ভুলে পাচারকারী চক্রের ইশারায় কাজকর্ম করতে থাকে।
পাচারকারী চক্র ভিকটিম আরিফা খাতুন কে জর্ডানে পাচার করার সর্বাত্মক প্রস্তুতি গ্রহণ করে। কিন্ত ভিকটিম আরিফার পাসপোর্ট ভেরিফিকেশনের বিষয়টি রৌমারী থানা পুলিশের নজরে আসলে ভিকটিমকে উদ্ধারের জন্য সর্বাত্মক প্রস্ততি নেয় রৌমারী থানা পুলিশ।
পাসপোর্ট ভেরিফিকেশকারী অফিসারের সহায়তা সহায়তায় ভিকটিমের অবস্থান সনাক্ত করে রৌমারী থানার একটি চৌকস টিম গত ১৬ অক্টোবর ২০২৩ তারিখ সকালে আরিফাকে উদ্ধার করে রৌমারী থানায় নিয়ে আসে এবং আরিফাকে তার পিতার নিকট জিম্মায় প্রদান করে।
কুড়িগ্রাম জেলা পুলিশের মিডিয়া মুখপাত্র অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (প্রশাসন ও অর্থ) মোঃ রুহুল আমীন বলেন,
নারী পাচারকারী চক্রটি সুকৌশলে ভিকটিম কে পাচার করার পরিকল্পনা করেছিলো যা পরবর্তীতে নিখোঁজ জিডি ও পাসপোর্ট ভেরিফিকেশন সঠিকভাবে অনুসন্ধান করার কারনে ভিকটিমকে পাচারের হাত থেকে রক্ষা করতে সক্ষম হয়েছে রৌমারী থানা পুলিশ।
নিরাপদ কুড়িগ্রামের লক্ষ্যে আমাদের অব্যহত অভিযান চলমান রয়েছে। আমারা সকলের সম্মিলিত সহযোগিতা কামনা করি।
এভাবেই কুড়িগ্রাম জেলায় সুস্থ ও সুন্দর ভবিষ্যৎ গঠনের লক্ষ্যে ও সম্মানিত নাগরিকদের টেকসই নিরাপত্তার নিমিত্তে সদা জাগ্রত কুড়িগ্রাম জেলা পুলিশ।