মোঃ শিহাব উদ্দিন টোকন,নাটোর প্রতিনিধি: শত কৃষক কষ্ট করছিলেন। বিষয়টি আমার মনে কাটার অনুমতি চাইলেন তখন না বলতে পারিনি।
শামসুল ইসলাম, জমিদাতা কৃষক, দৌলতপুর, বড়াইগ্রাম, নাটোর
খবর পেয়ে ইউএনও আবু রাসেল ওই এলালেগেছে। তাই ইউএনও সাহেব যখন আমার জমিতে খালকা পরিদর্শন করেন। এ সময় তিনি শামসুল ইসলাম ও ইসমাইল হোসেনের সঙ্গে দেখা করেন। জনস্বার্থে তাঁদের কিছু জমিতে খাল খননের অনুমতি চান। এতে সম্মত হন ওই দুই ব্যক্তি। পরে ইউএনও জেলা প্রশাসকের সঙ্গে প্রয়োজনীয় পরামর্শ করে শুক্রবার থেকে দুই মিটার প্রশস্ত ৪০০ মিটার দীর্ঘ খালটির খনন শুরু করেন। প্রশাসনের খরচে এক্সকাভেটর (খননযন্ত্র) দিয়ে দিন-রাত খালটি খননের কাজ চলছে। আজ রোববার খাল খনন শেষ হবে।
৪০০ মিটার দীর্ঘ খালটি খননের কাজ আজ রোববার শেষ হবে। গতকাল শনিবার বিকেলে নাটোরের বড়াইগ্রাম উপজেলার দৌলতপুর গ্রামে
৪০০ মিটার দীর্ঘ খালটি খননের কাজ আজ রোববার শেষ হবে। গতকাল শনিবার বিকেলে নাটোরের বড়াইগ্রাম উপজেলার দৌলতপুর গ্রামেছবি: প্রথম আলো
জলাবদ্ধতার কারণে মাঝগ্রামের কৃষক আতাউর রহমানের ১৭ বিঘা জমিতে ফসল ফলানো যেত না। দৌলতপুরের কাদের মল্লিকের ৬ বিঘা, রহিজ ভূঁইয়ার ৫ বিঘা, আবদুস সোবহানের ১৫ বিঘা ও রশিদ ভান্ডারির ১০ বিঘা জমিও ছিল অনাবাদি। আলাপকালে এই কৃষকেরা বলেন, খাল খননের ফলে এখন আর জলাবদ্ধতার সমস্যা থাকবে না। সারা বছরই তাঁরা ফসল ফলাতে পারবেন। ব্যক্তিগত জমিতে খাল খনন করতে দেওয়ায় তাঁরা শামসুল ইসলাম ও ইসমাইল হোসেনের প্রতি কৃতজ্ঞতা জানান। একইসঙ্গে সমস্যা সমাধানের উদ্যোগ নেওয়ায় ইউএনওকেও ধন্যবাদ জানান তাঁরা।
গোপালপুর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান আবু বকর সিদ্দিক বলেন, শামসুল ইসলামের দেড় বিঘা আর ইসমাইলের বাড়ির ভিটার দুই শতাংশ জমি জনস্বার্থে খাল খনন করতে দেওয়ায় ছয় গ্রামের হাজারো মানুষের দুঃখের অবসান হয়েছে।
দুই কৃষককে ধন্যবাদ জানিয়ে ইউএনও আবু রাসেল বলেন, খাল খননের জমি দেওয়ার জন্য দুজন কৃষককে রাজি করানোটা ছিল চ্যালেঞ্জ। সেটা করতে পেরেছেন। এই সেবা তাঁরা অব্যাহত রাখবেন বলেও আশা প্রকাশ করেন তিনি।
জমিদাতা শামসুল ইসলাম বলেন, ‘আমি নিজেও একজন কৃষক। এলাকার পানি বের করে দেওয়া সম্ভব না হওয়ায় আমার মতো শত শত কৃষক কষ্ট করছিলেন। ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছিলেন। বিষয়টি আমার মনে লেগেছে। তাই ইউএনও সাহেব যখন আমার জমিতে খাল কাটার অনুমতি চাইলেন তখন না বলতে পারিনি। আমি খুশি মনেই জমি ছেড়ে দিয়েছি।’