আব্দুল ওয়াদুদ,পটুয়াখালী প্রতিনিধি: ভিক্ষুকরাও নিতে চাচ্ছে না এক ও দুই টাকার কয়েন। ছোট-বড় ব্যবসায়ী, হাট বাজার কোথাও চলে না এই কয়েন। গত ৪-৫ বছর ধরে অজানা কারণেই মির্জাগঞ্জে অচল হয়ে পড়েছে এই কয়েন। ব্যবসায়ীদের অভিযোগ, কোনো ব্যাংক নিতে চায় না, ফলে অচল হয়ে পড়েছে কয়েনগুলো। ব্যবসায়ীরা বলছেন জনসচেতনতার অভাব, তাছাড়া প্রশাসনের পক্ষ থেকে উদ্যোগ নিলে আবারও সচল হবে এক ও দুই টাকার কয়েন। উপজেলার বিভিন্ন হাট-বাজারে খোঁজ নিয়ে এর সত্যতা পাওয়া গেছে। তবে পাঁচ টাকার কয়েন নিয়ে কারও আপত্তি নেই। শুধু এক ও দুই টাকার কয়েন যেন ‘অচল পয়সা’।
মির্জাগঞ্জ উপজেলার হাট-বাজারসহ ছোট-বড় ব্যবসা প্রতিষ্ঠানে এক ও দুই টাকার কয়েন দেখলেই ক্রেতা-বিক্রেতাদের মধ্যে লেগে যায় তর্ক। কোনও পক্ষই এসব ধাতব মুদ্রা নিতে রাজি হয় না। উপজেলার দোকানদার ও ক্রেতাদের সঙ্গে দুই ও এক টাকার কয়েন সম্পর্কে কথা হলে এমনই তথ্য উঠে আছে।
উপজেলা সদর সুবিদখালী বাজারের পাইকারি ব্যবসায়ী বাবুল বলেন, কয়েক বছর যাবৎ এক ও দুই টাকার কয়েন মির্জাগঞ্জে অচল হয়ে আছে। কেউ এই কয়েন নিতে চান না। অনেক ব্যবসায়ীর কাছে বিপুল পরিমাণ কয়েন জমে আছে। এক ও দুই টাকার কয়েনগুলো কোনও ব্যাংকও নিতে চাচ্ছে না।’
সুবিদখালী বাজারের চা-দোকানদার মনির বলেন, ‘আমার কাছে এক ও দুই টাকার দুই হাজার কয়েন জমা হয়ে আছে। কেউই এই কয়েন নিতে চায় না। এমনকি ভিক্ষুকরাও এক ও দুই টাকার কয়েন ভিক্ষা নেন না। তাই এক ও দুই টাকার কয়েন অনেকে দিলেও তা নেওয়া হয় না। কারণ এই কয়েন মির্জাগঞ্জে চলে না। এছাড়া পাইকারি ব্যবসায়ীরাও এক ও দুই টাকার কয়েন নিতে চান না। সব ধরনের পণ্যের মহাজনরা কয়েন দেখলে অনেকটা ক্ষিপ্ত হয়ে ওঠেন।’
সচেতন মহল, ভুক্তভোগী, জনসাধারণ ও ব্যবসায়ীরা বলছেন, এবিষয়ে জনসচেতনতার অভাব রয়েছে। ব্যাংকে কয়েন নিতে অনীহা দেখায়। এ কারণে একেবারেই বন্ধ হয়েছে এই কয়েনের আদান-প্রদান। সব ব্যাংকে এই কয়েন নিলে, এই সমস্যার সমাধান হবে। তাছাড়া প্রশাসনের পক্ষ থেকে জোড়ালো উদ্যোগ নিলে মির্জাগঞ্জে আবারও সচল হবে এক ও দুই টাকার কয়েন। কারণ ব্যবসা প্রতিষ্ঠান বা বাড়িতে প্রচুর পরিমাণ কয়েন পড়ে আছে অলস টাকা হিসেবে। এতে অর্থনীতির গতিশীলতা নষ্ট হচ্ছে।
এ ব্যাপারে সুবিদখালী বাজার ব্যবসায়ী সমিতির সাধারণ সম্পাদক হাজী আবু বেপারী বলেন, ‘ব্যবসায়ীরা কয়েন নিচ্ছে না কারণ, ব্যাংকে তা নিচ্ছে না। সরকার থেকে কয়েনগুলো বাতিল করা হয়নি। এক ও দুই টাকার কয়েন যাতে এই উপজেলায় চালু হয়, সে ব্যাপারে প্রশাসনের উচিৎ জোড়ালো পদক্ষেপ গ্রহণ করা।’
মির্জাগঞ্জ শাখা সোনালী ব্যাংকের ব্যবস্থাপক মো. সোলায়মান হায়দার বলেন, ‘সরকার এক ও দুই টাকার কয়েন বাতিল করেননি। তাই আমরা গ্রাহকের কাছ থেকে সব ধরনের কয়েন নেই এবং দেই। মির্জাগঞ্জে এক ও দুই টাকার কয়েন কেন চলে না, এর কারণ আমার জানা নাই।
এ বিষয়ে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মোসা. সাইয়েমা হাসান বলেন, ‘ব্যাংক থেকে কয়েন না নেয়ার বিষয়ে লিখিত কোন নির্দেশনা না থাকলে অবশ্যই কয়েন নিতে হবে।