
মোঃ আজিজুল হক- দুর্গাপুর প্রতিনিধি (নেত্রকোনা)
বাবা-মা’র পরে যিনি একজন মানুষের জীবনে সবচেয়ে বড় প্রভাব ফেলতে পারেন, তিনি হলেন শিক্ষক। আর এমনই একজন শিক্ষক নেত্রকোনার দুর্গাপুর উপজেলার গাঁওকান্দিয়া মফস্বল ইউনিয়নের হাজী মো. ফজলুল হক—যিনি শুধু শিক্ষক নন, ছিলেন আলোর দিশারী।
তার শিক্ষাদানে বেড়ে উঠেছে শত শত শিক্ষার্থী। অনেকেই আজ দেশের নামকরা প্রতিষ্ঠানে, ব্যাংকে, প্রশাসনে এবং বিভিন্ন পেশায় সুনামের সঙ্গে কাজ করছেন। কিন্তু যাদের সাফল্যের নেপথ্যে ছিলেন তিনি, তারা আজও ভালোবাসায় স্মরণ করেন প্রিয় শিক্ষক ফজলুল হককে।
তার জীবনের বড় অংশ কেটেছে শিক্ষকতা করে। বিদ্যালয়ে দায়িত্ব পালনের বাইরে, নিজ বাড়িতে বিনামূল্যে গরীব-মেধাবী ছাত্রছাত্রীদের পড়াতেন তিনি। অনেকের পড়াশোনার খরচও বহন করেছেন নিজ হাতে। শুধু পাঠ্যবই নয়, তাদের গড়েছেন নীতিনিষ্ঠ মানুষ হিসেবে।
রংপুরে কর্মরত এক প্রাক্তন শিক্ষার্থী আবেগভরা কণ্ঠে বলেন, “ফজলুল হক স্যার ছিলেন আমাদের জন্য আশীর্বাদ। এমন শিক্ষক এখন দুর্লভ। উনার মতো মানুষ আগামী একশো বছরেও পাওয়া কঠিন।”
শুধু ছাত্রছাত্রীই নয়, নিজের চার সন্তানকেও তিনি গড়েছেন শিক্ষার পথে। চারজনই এখন শিক্ষকতা পেশায় নিয়োজিত। পিতার আদর্শ ও সেবামূলক মনোভাব দেখে তার সন্তানেরাও শিক্ষকতাকে পেশা হিসেবে বেছে নেন। এই দৃষ্টান্ত আজ অনেক পরিবারের জন্য অনুপ্রেরণা।
নেত্রকোনা জেলার শিক্ষাঙ্গনে তার অবদান অনস্বীকার্য। দীর্ঘ ৩৫ বছরের শিক্ষকতা জীবনে তিনি যেমন পাঠদান করেছেন, তেমনি নীরবে গড়ে তুলেছেন এক আলোকিত প্রজন্ম। বর্তমানে তিনি অবসরপ্রাপ্ত হলেও তার অবদান স্মরণীয় হয়ে আছে শিক্ষার্থীদের হৃদয়ে।
এক ছাত্রী বলেন, “স্যার আমাদের শুধু পড়াননি, মানুষ হতে শিখিয়েছেন। আজীবন তার কাছে ঋণী থাকবো। সেলুট হে প্রিয় শিক্ষক!”
তার মতো আদর্শবান, মানবিক শিক্ষক সমাজে আজও অনুকরণীয়। তিনি প্রমাণ করেছেন, একজন সাদা-মাটা গ্রামীণ শিক্ষকও হাজারো জীবন আলোকিত করতে পারেন। তাঁর অবদান যতটা নিঃশব্দ, ততটাই গভীর।
ছাত্রছাত্রী ও এলাকাবাসীর একটাই প্রার্থনা—এই প্রিয় মানুষটির নেক হায়াত ও দীর্ঘায়ু হোক।