নিজস্ব প্রতিবেদকঃ বাংলাদেশী অপ্রাপ্তবয়স্ক তরুণীদের দুবাইতে বিউটি পার্লারে চাকুরী দেওয়ার প্রলোভন দেখিয়ে জোরপূর্বক অনৈতিক কার্যক্রম করানোর অভিযোগ উঠেছে বাংলাদেশি প্রবাসী দু’জন দালালের বিরুদ্ধে।
প্রলোভনের শিকার হয়ে প্রবাসে যাওয়া ভুক্তভোগী নারীরা এমন অভিযোগ তুলেছেন।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক ভুক্তভোগীরা অভিযোগ করে বলেন, ফেনীর ছাগলনাইয়ার প্রবাসী মোহাম্মদ কামরুল ইসলাম ও তার সহযোগী শরীয়তপুর জেলার পালং থানার বাসিন্দা দুবাই প্রবাসী কণা আক্তার মিম চক্র এই কার্যক্রমের সাথে জড়িত।
ভুক্তভোগীরা অভিযোগ করে জানায়, অভিযুক্ত দু’জন বাংলাদেশী অপ্রাপ্তবয়স্ক তরুণীদের দুবাইতে বিউটি পার্লারে চাকুরী দেওয়ার কথা বলে জোরপূর্বক অনৈতিক কার্যক্রম করাচ্ছেন। অনেক সময় জোরপূর্বক বিভিন্ন হোটেলে ও ক্লাবে যেতে বাধ্য করে তারা। না গেলে শারিরিক ও মানসিকভাবে নির্যাতন করেন।
ছাগলনাইয়ায় খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, কামরুল ইসলাম ও তার সহযোগী কণা আক্তার মিম দুইজনে মিলে দুবাই আল রিগা এলাকায় গোল্ডেন টিউলিপ দেরা হোটেল নাইট ক্লাব কুইন-১ ও দুবাই দেরা এলাকায় সাফরণ বুটিক হোটেল নাইট ক্লাব কুইন-২ ও সোনার বাংলা স্যাটেলাইটসহ তিনটি নাইট ক্লাবে দীর্ঘদিন ধরে অনৈতিক ব্যবসা পরিচালনা করে আসছেন।
ড্যান্স ক্লাবে আসা অধিকাংশ মেয়েই নিম্নবিত্ত পরিবারের। তাদের মোটা অঙ্কের অর্থের প্রলোভন দেখিয়ে অনৈতিক কাজে বাধ্য করা হয়।
দুবাইয়ের কর্মরত এক তরুণী নাম প্রকাশ না করে সাংবাদিকদের বলেন, ‘আমাদের বলা হয়েছিল দুবাইয়ে তিন মাসব্যাপী একটি নাচের অনুষ্ঠান হবে। এজন্য আমাদের তিন মাস থাকতে হবে। প্রতি মাসে ৫০ হাজার করে তিন মাসে দেওয়া হবে দেড় লাখ টাকা। বাংলাদেশে থাকাকালীন অগ্রিম দেওয়া হয় ৫০ হাজার টাকা। প্লেনের টিকিট এবং থাকা-খাওয়া ফ্রি।’
গোল্ডেন টিউলিপ দেরা হোটেল নাইট ক্লাব কুইন-১ কর্মরত বাংলাদেশি এক তরুণী নাম প্রকাশ না করার শর্তে সাংবাদিকদের জানান, বারে কর্মরত অধিকাংশ মেয়ের বয়স ১৮ থেকে ২৪ বছরের মধ্যে। তাদের অনেকেই নিজ দেশে কোনো তরুণের সঙ্গে ভালোভাবে কথা বলেননি, প্রেমও করেননি। কেউ কেউ এখানে এসে তরুণ গ্রাহকদের সঙ্গে প্রেমে জড়িয়ে পড়েন। তারা শুধু প্রেমিকের সঙ্গেই রাত কাটাতে চান। কিন্তু মালিকরা তাদের বাধ্য করেন অন্য পুরুষের সঙ্গে রাত কাটাতে। রাজি না হলে মেয়েদের ওপর চালানো হয় অমানুষিক নির্যাতন।
ভুক্তভোগী তরুণীরা এবং তাদের স্বজনেরা জানান, অভিুযুক্ত দুজনকে বাংলাদেশে ফিরে এনে দ্রুত আইনের আওতায় নিয়ে আশা হোক, যাতে করে বাংলাদেশী নিম্নআয়ের আর কোনো বাবা মায়ের মেয়ে এমন প্রতারকের হাতে না পড়ে।
তবে এ এমন অভিযোগের বিষয়ে জানতে কামরুল ও মিমের সাথে যোগাযোগ করার চেষ্টা করা হয়। তবে দুজনে বিদেশে থাকায় তাদের সঙ্গে যোগাযোগ করা সম্ভব হয়নি। এবং তাদের বক্তব্য পাওয়াও সম্ভব হয়নি।