
আরেফিন ইসলাম– নীলফামারী প্রতিনিধি◼️
মানুষের ব্যবহার তার প্রকৃত পরিচয় তুলে ধরে। সমাজে প্রচলিত একটি প্রবাদ হলো, ব্যবহারে বংশের পরিচয়। একজন মানুষের আচরণই বলে দেয় সে কেমন ব্যক্তি। তার চরিত্র, মনোভাব এবং পারিপার্শ্বিকতার প্রতিফলন ঘটে তার ব্যবহারে।
হযরত আলী বলেছিলেন, মানুষের ভাষা ও ব্যবহারই তার মনের দর্পণ। যদি কেউ ভালো মানুষ হয়, তার ব্যবহারও হবে কোমল, বিনয়ী ও সহানুভূতিশীল। আর যদি কেউ অভদ্র বা রূঢ় প্রকৃতির হয়, তবে তার আচরণে থাকবে কঠোরতা, অহংকার আর দাম্ভিকতা।
তবে রূঢ়ভাষী মানুষ সবসময় খারাপ হয় না। অনেক সময় তারা হয়ে থাকেন নীতিমান, স্পষ্টভাষী ও অন্যায়ের বিরুদ্ধে প্রতিবাদী। কিন্তু যিনি ইচ্ছাকৃতভাবে অসদাচরণ করেন, সমাজ তার কাছ থেকে মুখ ফিরিয়ে নেয়। এক সময় কেউ তার পাশে থাকতে চায় না, তার প্রতি থাকে অনাস্থা ও বিরক্তি।
ভালো আচরণ শুধু সম্পর্ক গড়ে তোলে না, বরং তা মানুষের মন জয় করে নেয়। মধুর ব্যবহার ও সদাচরণ এমন একটি শক্তি, যা বিনা মূল্যে অর্জন করেও অমূল্য প্রাপ্তি এনে দেয়। ভালোবাসা, সহানুভূতি, শ্রদ্ধা—সবই অর্জিত হয় একটি বিনয়ী আচরণের মাধ্যমে।
ইসলামেও উত্তম আচরণের গুরুত্ব অসীম। পবিত্র কোরআনে বলা হয়েছে, মানুষের সঙ্গে ভালোভাবে কথা বলো। রাসুল (সা.) বলেন, মানুষের সঙ্গে সদাচরণ করাও ইবাদতের শামিল। এমনকি ছোট্ট একটি হাসিও সদকার সমান।
চরিত্র মানুষকে উন্নত করে তোলে। এই চরিত্র গঠনের ভিত্তি হয় পরিবারে, এরপর শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে। তাই পরিবারের পাশাপাশি শিক্ষকদেরও ভূমিকা গুরুত্বপূর্ণ। একজন শিক্ষার্থী যেন শৃঙ্খলা, সহনশীলতা ও মানবিক গুণ অর্জন করে সেই পরিবেশ তৈরি করা জরুরি।
একজন অসদাচরণকারী ব্যক্তি সমাজে দীর্ঘদিন টিকে থাকতে পারে না। একসময় তার জনপ্রিয়তা, মর্যাদা এবং বিশ্বাসযোগ্যতা ধ্বংস হয়ে যায়। তাকে কেউ মূল্য দেয় না। সে হয়ে ওঠে ঘৃণিত এবং একঘরে।
ভালো ব্যবহার কখনো ভুল পথে নেয় না। তাই সুন্দর ব্যবহার হোক জীবনের পথচলার প্রধান অস্ত্র।