
স্বাস্থ্য ডেস্ক◾
প্রায়ই মাথা ধরে কেন? এই প্রশ্নটা এখন আমাদের আশপাশে প্রায়ই শোনা যায়। কারও সকাল শুরু হয় মাথাব্যথা দিয়ে, কেউবা দিনের শেষে ক্লান্ত মস্তিষ্ক নিয়ে ঘুমাতে যায়। ব্যস্ত জীবন, ঘুমের অভাব, মানসিক চাপ, কিংবা একটানা মোবাইল-কম্পিউটারে চোখ রাখার মতো অভ্যাসগুলো কি কেবল এই ব্যথার কারণ, নাকি এর আড়ালে লুকিয়ে আছে আরও গুরুতর কোনো বিপদ?
চিকিৎসা বিশেষজ্ঞদের মতে, নিয়মিত মাথাব্যথা হওয়াটা স্বাভাবিক কোনো ব্যাপার নয়। বরং এটি হতে পারে চোখের সমস্যার পূর্বাভাস, সাইনাস সংক্রমণ, উচ্চ রক্তচাপ কিংবা মাইগ্রেনের প্রতিফলন। অনেক ক্ষেত্রে এই মাথাব্যথা হতে পারে ব্রেইন টিউমার, মেনিনজাইটিস বা স্ট্রোকের শুরুতেও।
এমন এক সময়ে দাঁড়িয়ে আছি, যখন শহর থেকে গ্রাম—প্রত্যেকেই স্বাস্থ্যঝুঁকির মধ্যে বসবাস করছে। কিন্তু আমরা কি জানি মাথাব্যথার সঠিক কারণ এবং করণীয়?
বিশেষজ্ঞরা বলছেন, মাথাব্যথা হলে প্রথমেই বুঝতে হবে ব্যথাটা কোথায় এবং কীভাবে হচ্ছে। তা কি কপালের দুই পাশে চাপ সৃষ্টি করে? নাকি চোখের পেছনে হালকা ধকধকে ব্যথা হয়? কেউ কি আলো বা শব্দে অতিরিক্ত সংবেদনশীল হয়ে পড়ছেন?
অনেকেই জানেন না, অতিরিক্ত চা বা কফি পান, অনিয়মিত খাওয়া, কিংবা দেহে পানিশূন্যতাও হতে পারে মাথাব্যথার কারণ। এমনকি হরমোনের তারতম্য, ঘাড়ে টান পড়া বা ভুল ভঙ্গিমায় বসার ফলেও মস্তিষ্কে ব্যথা অনুভূত হতে পারে।
শুধু তাই নয়, পরীক্ষার আগে বা অফিসের বড় প্রেজেন্টেশনের আগেও অনেকে মাথাব্যথায় আক্রান্ত হন—যার পেছনে থাকে তীব্র মানসিক চাপ বা উদ্বেগ। অথচ এই চাপকে গুরুত্ব না দিয়ে আমরা পেইনকিলার খেয়ে ব্যথা চেপে রাখি, যা দীর্ঘমেয়াদে মারাত্মক ক্ষতি ডেকে আনতে পারে।
এ অবস্থায় করণীয় কী?
বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকেরা বারবার বলছেন—অতিরিক্ত মাথাব্যথাকে অবহেলা করা উচিত নয়। প্রয়োজনে চোখ পরীক্ষা করানো, রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণে রাখা, পর্যাপ্ত ঘুম, পানি পানের অভ্যাস গড়ে তোলা এবং মানসিক চাপ কমানোর চর্চা করা অত্যন্ত জরুরি।
আর যদি মাথাব্যথা হয় তীব্র, হঠাৎ শুরু হয়, সঙ্গে থাকে ঝাপসা দৃষ্টি বা বমি—তবে অবিলম্বে একজন নিউরোলোজিস্টের কাছে যেতে হবে।
মাথাব্যথা শুধুই একটি ব্যথা নয়—এটি হতে পারে আপনার শরীরের দেওয়া গুরুত্বপূর্ণ একটি সতর্কবার্তা। সেই বার্তাকে বুঝতে শিখুন, অবহেলা নয়—সচেতন হোন।