
খাইরুল ইসলাম– ডেস্ক রিপোর্ট:◾
পোষা বিড়ালকে মুখে করে একটি মৃ-ত ইঁদুর বা পাখি বাড়িতে আনতে দেখে অনেকেই ভয় বা বিরক্তিতে চমকে উঠেন। অথচ প্রতিদিনই সে খাচ্ছে পেটভরে, ভালোবাসা পাচ্ছে পরিবারের সকলের—তাহলে এমন আচরণের কারণ কী?
প্রকৃতপক্ষে, পোষ মানানো হলেও বিড়ালের মধ্যে আজও রয়ে গেছে তার পূর্বপুরুষের আদিম স্বভাব। বিড়াল একটি মাংসাশী প্রাণী, এবং এদের বেঁচে থাকতে হলে খাদ্যতালিকায় মাংস থাকা আবশ্যক। কারণ, বিড়াল ‘টাউরিন’ নামক একটি গুরুত্বপূর্ণ অ্যামাইনো অ্যাসিড নিজের শরীরে উৎপাদন করতে পারে না। এই উপাদানটি তাদের দৃষ্টিশক্তি, দাঁতের গঠন এবং লোমের স্বাস্থ্য রক্ষায় অপরিহার্য।
শুধু খাওয়ার জন্য নয়, শিকার করা বিড়ালের একটি প্রাকৃতিক প্রবৃত্তি। খাবার পর্যাপ্ত থাকলেও অনেক সময় বিড়ালকে শিকার করতে দেখা যায়। কারণ, তাদের কাছে ‘খাওয়া’ আর ‘শিকার’—দুইটি ভিন্ন বিষয়। শিকার করা তাদের কাছে একপ্রকার খেলা, আবার একইসঙ্গে এটি মানসিক উত্তেজনা বা স্বস্তি প্রদান করে।
বাড়িতে মৃ-ত প্রাণী আনার পেছনে রয়েছে আরও একটি ব্যাখ্যা—বিড়ালের মাতৃত্ববোধ। মা বিড়াল অনেক সময় বাচ্চাদের শিকার শেখাতে কিংবা কীভাবে শিকার ধরতে হয় তা দেখাতে শিকার করা প্রাণী এনে সামনে রাখে। আবার অনেক সময় পোষা বিড়াল তার পরিবারের মানুষদের উপহার হিসেবে শিকার এনে দেয় বলেও ধারণা করা হয়।
বিশেষ করে ইঁদুরের প্রতি বিড়ালের টান বরাবরই বেশি। এলোমেলোভাবে ছোটাছুটি করা ইঁদুরের গতি বিড়ালের চোখে পড়ে খুবই উত্তেজনাপূর্ণ, আর এই উত্তেজনাই তাকে শিকারে প্ররোচিত করে।
অতএব, বিড়ালের এমন আচরণ আসলে তার শিকারে পারদর্শী স্বভাবেরই বহিঃপ্রকাশ। এটি ভয় পাওয়ার কিছু নয়, বরং তার প্রকৃতিগত আচরণ—যা হাজার বছরের বিবর্তনের ধারাবাহিকতায় আজও টিকে আছে।