কুড়িগ্রাম প্রতিনিধি: কুড়িগ্রাম জেলার ভূরুঙ্গামারী উপজেলায় আমন ধানে অতিরিক্ত পোকা ও ছত্রাকের আক্রমণে দুশ্চিন্তায় পরেছে কৃষক।
দুই/তিন বার কিটনাশক প্রয়োগ করেও মিলছে না প্রতিকার।
চলতি আমন মৌসুমে প্রতিকুল বৈরি আবহাওয়ায় ধানে হঠাৎ বেড়েছে পোকার আক্রমণ। বিগত মৌসুমে এক থেকে দুই বার কিটনাশক প্রয়োগ করে প্রতিকার মিললেও চলতি মৌসুমে দুই/তিন বার কিটনাশক প্রয়োগ করেও মিলছে না প্রতিকার।
এতে হতাশায় পরেছে কৃষকেরা। কৃষকদের দ্বারপ্রান্তে গিয়ে সেবা দিচ্ছেন সংশ্লিষ্ট উপসহকারী কৃষি কর্মকর্তারা।
উপজেলা কৃষি অফিস সূত্রে জানা যায়, চলতি মৌসুমে আমন ধানের মোট লক্ষ্যমাত্রা অর্জিত হয়েছে ১৬৮৫০হেক্টর। হাইব্রিড জাতের ২০০০ হেক্টর। স্থানীয় জাতের ০৫ হেক্টর এবং উপশী জাতের ১৪৮৪৫ হেক্টর জমি আবাদ হয়েছে।
০৯ ও ১০ই অক্টোবর সরেজমিনে গিয়ে কথা হয় কিছু কৃষকদের সাথে।
উপজেলার জয়মনিরহাট ইউনিয়নের শিংঝাড় ব্লকের কৃষক মোঃ ফরহাদ হোসেন জানান গত বছর এক /দুই বার কিটনাশক প্রয়োগ করে সুফল পেয়েছিলাম।
এবার অতি বৃষ্টির কারনে ধানের জমিতে ছত্রাক ও পাতা মোরানো পোকার আক্রমণ দেখা দিয়েছিল।আমাদের ব্লকের বিএস মোছাঃ নাজমিন আক্তারের সু পরামর্শে কিটনাশক প্রয়োগ করে ইনশাআল্লাহ আমার ধানের জমিতে এখন কোন পোকার আক্রমণ ও ছত্রাক নাই বললেই চলে।
শিংঝাড় ব্লকের অন্য কৃষক মোঃ সাইদুর রহমানের সাথে কথা বলে জানা গেল উপসহকারী কৃষি কর্মকর্তা (বিএস) মোছাঃ নাজমিন আক্তারের কথা মতো আমার জমিতে আলোর ফাঁদ ব্যবহার করে অনেক সুফল পেয়েছি। এখন আমার জমিতে পোকার আক্রমণ কম। আমারা সকল কৃষক যদি এক সাথে পাশাপাশি সব জমিতে আলোর ফাঁদ ব্যাবরার করি তবে পোকার বংস ধংস হবে বলে মনে করি। একই ব্লকের অন্য কৃষক রফিকুল ইসলাম বলেন, আমি তিন বিঘা জমিতে ধান লাগাইছি।এবার যে হারে বৃষ্টি হচ্ছে এতে করে ধানের জমিতে পাতা মোরানো পোকা ও ছত্রাকের ব্যাপক আক্রমন হয়ছিল কৃষি অফিসের বিএস মোছাঃ নাজমিন আপার পরামর্শে কিটনাশক প্রয়োগ করে এখন আমার ধানক্ষেত রোগমুক্ত।
একই ইউনিয়নের বড়খাটামারী ব্লকের কৃষক মাসুদ তালুকদার, নুরুল ইসলাম, মাসুদ রানা, শারমিন আক্তার, সিদ্দিক মিয়া,সহ অন্যান্য কৃষকদের সাথে কথা বলে যানা যায়
সংশ্লিষ্ট উপসহকারী কৃষি কর্মকর্তা (বিএস) মোঃ শহিদুল ইসলাম ও মোছা নাজমিন আক্তার এলাকার কৃষকদের দ্বারপ্রান্তে গিয়ে সু পরামর্শ দিচ্ছেন।
উপজেলার আন্ধারিঝাড় ইউনিয়নের কৃষক মাহবুব, সেকান্দার, রহিম বাদশা সহ অনেকেই জানান এবার বিএস রা আমাদের কাছে এসে ধানের জমি দেখে সঠিক পরামর্শ দিচ্ছেন।
চর ভূরুঙ্গামারী ইউনিয়নের কৃষক জাহাঙ্গীর আলম বলেন গত বছর ধান ক্ষেতে দুইবার কিটনাশক প্রয়োগ করে পোকামাকড় মুক্ত ঝকঝকে ধান ঘরে তুলেছিলাম।
এই মৌসুমে ধানক্ষেতে এখন পযর্ন্ত চারবার কিটনাশক প্রয়োগ করেছি তার পরেও পোকার আক্রমণ থেকে ধানক্ষেত রক্ষা করতে পারছিনা।
পাইকেরছড়া এলাকার বরকত, শফিয়ার সহ একাধিক কৃষক বলেন, হঠাৎ করে এই মৌসুমে ধানে পোকার আক্রমণ খুব বেশি, সাথে লিপব্লাস্ট এর আক্রমণ। তিন চারবারে বিঘা প্রতি তিন হাজার টাকার কিটনাশক ব্যবহার করেছি। এতেও নিশ্চিত হতে পারছি না।
তারা বলেন সর্বশেষ কৃষি উপসহকারী কর্মকর্তা শাহনুর রহমানের পরামর্শে সর্বশেষ কীটনাশক প্রয়োগ করে ফসলের অবস্থা উন্নতির দিকে।
উপজেলা কৃষি অফিসার মো. আব্দুল জব্বার বলেন আমাদের কৃষি উপসহকারী গন সর্বাক্ষনিক মাঠে কাজ করছে, কৃষকদের প্রয়োজনীয় সু পরামর্শ দিচ্ছে। কৃষকের ফসলের কোন সমস্যা হলে যতদ্রুত সম্ভব কৃষি উপসহকারি অথবা কৃষি সম্পসারণ অফিসে যোগাযোগ করার পরামর্শ দেন ।
কিন্তু কৃষক আমাদের সাথে যোগাযোগ না করে স্থানীয় কিটনাশকের দোকানে গিয়ে মাত্রাতিরিক্ত ঔষধ অপ্রয়োজনীয় ঔষধ ব্যবহার করছে এতে ফসল আরো ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে।
এখন পাতা মোড়ানো পোকার আক্রমণ বেশি হচ্ছে।বৈরি আবহওয়া ও সঠিক ব্যবস্থাপনার অভাবে এরকম হচ্ছে।
পাতা মোড়ানো পোকার জন্যে প্রতি লিটার পানিতে ০২ গ্রাম করাটাপ জাতীয় ঔষধ ব্যবহার করতে হবে।
কৃষকদের ফসলের যেকোনো সমস্যায় আমরা পরামর্শ দিয়ে যাচ্ছি।