Dhaka ০১:১২ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ১৩ জুন ২০২৫, ৩০ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ
শিরোনামঃ
বিড়ালের রহস্যজনক আচরণ: কেন মৃ-ত প্রাণী বাড়িতে নিয়ে আসে? ভারতে মন্দিরের সেবায়েতকে পিটিয়ে হত্যা: অভিযুক্ত আটক খেজুরে কী আছে, যা বিষ আর জাদুকেও দূরে রাখে? মৌলভীবাজারে রেললাইনে হাঁটতে গিয়ে প্রাণ হারালেন এক যুবক প্রতিদিন মাথাব্যথা কেন হচ্ছে? লুকিয়ে আছে কোন বিপদ? বাইতুল মুকাদ্দাস: ইসলামের প্রথম কিবলা ও রহস্যময় ঐতিহ্য গাইবান্ধায় মোবাইল ব্যাংকিং হ্যাকিং চক্রের দুই সদস্য আটক, উদ্ধার ১৬৪৯ সিম ও নগদ অর্থ নরসিংদীতে গণ অধিকার পরিষদের ঈদ পুনর্মিলনী: ঐক্যের ডাক নেতাদের ঈদের ছুটিতে পর্যটকদের ঢল, প্রাণ ফিরে পেল মৌলভীবাজারের পর্যটন স্পটগুলো একজন দাস থেকে জান্নাতের ঘোষক:হজরত বেলাল (রাঃ)-এর অবিস্মরণীয় জীবন
নোটিশঃ
প্রিয়" পাঠকগণ", "শুভাকাঙ্ক্ষী" ও প্রতিনিধিদের উদ্দেশ্যে জানানো যাচ্ছে:- কিছুদিন যাবত কিছু প্রতারক চক্র দৈনিক ক্রাইম তালাশ এর নাম ব্যবহার করে প্রতিনিধি নিয়োগ ও বিভিন্ন প্রলোভন দেখিয়ে অর্থ হাতিয়ে নিচ্ছে। তার সাথে একটি সক্রিয় চক্র সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে বিভিন্ন গ্রুপ বিভিন্ন ভাবে "দৈনিক ক্রাইম তালাশ"কে হেয় প্রতিপন্ন করার চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে। মনে রাখবেন "দৈনিক ক্রাইম তালাশ" এর অফিসিয়াল পেজ বা নিম্নের দুটি নাম্বার ব্যাতিত কোন রকম লেনদেনে জড়াবেন না। মোবাইল: 01867329107 হটলাইন: 01935355252

রৌমারীতে বিভিন্ন প্রশিক্ষণ নিয়ে স্বাবলম্বী ১৫৬টি পরিবার

  • Reporter Name
  • Update Time : ১১:০০:৪১ অপরাহ্ন, সোমবার, ২ ডিসেম্বর ২০২৪
  • ১৩৭ Time View

মােঃ সাহের আলী,রৌমারী (কুড়িগ্রাম) প্রতিনিধি: রৌমারীতে বিভিন্ন প্রশিক্ষণ নিয়ে স্বাবলম্বী ১৫৬টি পরিবার। একটু স্বাচ্ছন্দ্যে জীবন চালানোর স্বপ্ন দেখে সবাই। কঠোর পরিশ্রমের মাধ্যমে কেউ কেউ পৌঁছে যায়তার স্বপ্নের দুয়ারে। কেউ সুখের দেখা পায়, কেউ পায় না। চরম দরিদ্রতা বহু মানুষকে ঠেলে দেয় অসহায়ত্বের দিকে।

একটুখানি স্বাবলম্বী হওয়ার চেষ্টায় নিয়মিত জীবনযুদ্ধ চালিয়ে যাওয়া অনেক অসহায় মানুষের পাশে দাঁড়িয়েছে আরডিআরএস বাংলাদেশ এজিও কর্তৃক বাস্তবায়িত চাইল্ড, নট ব্রাইড (সিএনবি) প্রকল্পের আওতায় কুড়িগ্রাম জেলার রৌমারী উপজেলায় বাল্য বিবাহ বন্ধসহ অসহায় পরিবার খুঁজে বের করে তাদের স্বাবলম্বী করার উদ্যোগ নেয় এই প্রকল্পটি। এ প্রকল্পটি গত ২০২৩ সালের প্রথম মাস থেকে অদ্যবদি পর্যন্ত রৌমারী উপজেলা ৬টি ইউনিয়নে ১৫৬টি বাল্য বিবাহ বন্ধসহ ১৫৬টি পরিবারকে স্বাবলম্বী হওয়ার পথ করে দিয়েছে দেশের বৃহত্তম এই সংস্থাটি।

বন্দবেড় ইউনিয়নের জয়নব আক্তার বলেন, আমার পরিবারের অ-সচ্ছলতার জন্য আমার পরিার আমাকে বিয়ের জন্য চাপ প্রয়োগ করলেও আমি রাজি না হয়ে আমার পরিবার কে বুঝাতে থাকি এক সময় আমি আমর পরিবার কে বোঝাতে সক্ষম হই এবং আমি আমার বাল্য বিয়ে বন্ধ করি। সিএনবি প্রকল্প আমার চোখ খুলে দিয়েছে। কারণ আমি যেদিন  আরডিআরএস ক্যাম্পাসে সিএনবি প্রকল্পের মাধ্যমে ব্রেভ গার্লস প্রশিক্ষনে অংশ নিই, সেদিনই আমি শপথ করি, এবং রৌমারী উপজেলাকে বাল্য বিবাহ বন্ধে নিরলস ভাবে আমরা গ্রুপ ওয়ারী কাজ করে যাচ্ছি। এবং আমরা সবাই একদিন এ উপজেলা কে বাল্য বিবাহ মুক্তসহ পরিবর্তনের হাতিয়ার হিসেবে নিজেদেরকে গড়ে তুলবো।

রৌমারী উপজেলার যাদুরচর ইউনিয়নে একেবারে প্রত্যন্ত অঞ্চলে বাস করেন চায়না বেগম। তার দুই মেয়ে কিছুটা মানসিক প্রতিবন্ধী হওয়ায় স্বামী জাকির হোসেন তাকে দুই মেয়েসহ প্রায় ১৬ বছর আগে ডিফোর্স দিয়ে দেয়। পরে তার দুই মেয়েকে নিয়ে চলে আসেন বাবার বাড়ী তার পরে দুই প্রতিবন্ধী মেয়ে কে নিয়ে চলে তিন বেলা ভাত জোটানোর যুদ্ধ এক পর্যায়ে অন্যের বাড়িতে ঝিয়ের কাজ করে কোনো রকমে জীবনযুদ্ধে টিকে ছিল এ পরিবারটি। তবে ২০২৩ সালে চাইল্ড, নট ব্রাইড (সিএনবি) প্রকল্পের জরিপের আওতায় আসে এ পরিবারটি। পরে আরডিআরএস বাংলাদেশ ও চাইল্ড, নট ব্রাইড (সিএনবি) এর প্রকল্পর মাধ্যমে গরু, ছাগল ও হঁাস-মুরগীর প্রশিক্ষণ দেওয়া হয়। পরে এ পরিবারটিকে স্বাবলম্বী করতে ১৬ হাজার টাকা দিয়ে দুইটি ছাগল ও ছয়টি মুরগীসহ প্রয়োজনীয় কিছু আসবাবপত্র কিনে দেওয়া হয়। এগুলো সে হাতে পেয়ে আনন্দে চোখে জল আসে চায়নার।  এই সামান্য সঞ্চয় পেয়ে খুলে যায় তার ভাগ্য। তার পরে তাকে আর ফিরে তাকাতে হয়নী পিছনে।  বর্তমানে বাবার দেওয়া ২ শতাংশ জায়গায় দুই মেয়েকে নিয়ে বসবাস করছেন চায়না বেগম। মেয়ে ফাতেমা, ফারজানা জরাজীর্ণ কন্ঠে আক্ষেভ করে বলেন, বাবা থেকেউ নেই, মা সহ তিন সদস্যের পরিবার আমরা থাকি খুবই জরাজীর্ণ একর্টি দুচালা টিনের ঘরে। আমাদের লেখাপড়া বন্ধছিলো তবে চাইল্ড, নট ব্রাইড (সিএনবি) এর প্রকল্পর মাধ্যমে আমাদের ভাগ্য খুলে যায়। বর্তমানে আমরা দুই বোন জামিয়া ইসলামিয়া মিফতাহুল জান্নাদ মহিলা মাদ্রাসায় দাওরায় (বিএ) পড়ি। আগেআমাগরে না খেয়ে থাকলেও এখন চাইল্ড, নট ব্রাইড (সিএনবি) এর অর্থে এখন আমাদের আর না খেয়ে থাকতে হয় না। আমরাও এখন পুষ্টিকর খাবার খাইতে পারি। এ প্রকল্পটি সুধু আমাদেরই না আমাদের মতো অনেকেরই ভাগ্য বদলিয়ে দিয়েছে এই চাইল্ড, নট ব্রাইড (সিএনবি)।

চাইল্ড নট ব্রাইড (সিএনবি) এর প্রকল্পর উপজেলা সমন্বয়কারী আব্দুল্লাহ আল মামুন বলেন, রৌমারী উপজেলাকে বাল্য বিবাহ মুক্ত করাসহ অসহায় পরিবারদেরকে স্বাবলম্বী করতে তাদের পাশে দাঁড়িয়েছে চাইল্ড, নট ব্রাইড (সিএনবি)। এতেকরে তৈরি হয়েছে অনেক নতুন জীবনের গল্প। খুলে দিয়েছে অনেক অসহায়ের স্বপ্নের দুয়ার। এই পরিবারগুলো স্বাবলম্বী হয়ে নিজেদের সন্তানদের মানুষের মতো মানুষ করবে। তাদের সন্তানরা দেশ ও মানুষের কল্যাণে কাজ করবে, যেই শ্লোগান নিয়ে এগিয়ে যাচ্ছে এই সংস্থাটি।

Tag :

Write Your Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Save Your Email and Others Information

About Author Information

Popular Post

বিড়ালের রহস্যজনক আচরণ: কেন মৃ-ত প্রাণী বাড়িতে নিয়ে আসে?

রৌমারীতে বিভিন্ন প্রশিক্ষণ নিয়ে স্বাবলম্বী ১৫৬টি পরিবার

Update Time : ১১:০০:৪১ অপরাহ্ন, সোমবার, ২ ডিসেম্বর ২০২৪

মােঃ সাহের আলী,রৌমারী (কুড়িগ্রাম) প্রতিনিধি: রৌমারীতে বিভিন্ন প্রশিক্ষণ নিয়ে স্বাবলম্বী ১৫৬টি পরিবার। একটু স্বাচ্ছন্দ্যে জীবন চালানোর স্বপ্ন দেখে সবাই। কঠোর পরিশ্রমের মাধ্যমে কেউ কেউ পৌঁছে যায়তার স্বপ্নের দুয়ারে। কেউ সুখের দেখা পায়, কেউ পায় না। চরম দরিদ্রতা বহু মানুষকে ঠেলে দেয় অসহায়ত্বের দিকে।

একটুখানি স্বাবলম্বী হওয়ার চেষ্টায় নিয়মিত জীবনযুদ্ধ চালিয়ে যাওয়া অনেক অসহায় মানুষের পাশে দাঁড়িয়েছে আরডিআরএস বাংলাদেশ এজিও কর্তৃক বাস্তবায়িত চাইল্ড, নট ব্রাইড (সিএনবি) প্রকল্পের আওতায় কুড়িগ্রাম জেলার রৌমারী উপজেলায় বাল্য বিবাহ বন্ধসহ অসহায় পরিবার খুঁজে বের করে তাদের স্বাবলম্বী করার উদ্যোগ নেয় এই প্রকল্পটি। এ প্রকল্পটি গত ২০২৩ সালের প্রথম মাস থেকে অদ্যবদি পর্যন্ত রৌমারী উপজেলা ৬টি ইউনিয়নে ১৫৬টি বাল্য বিবাহ বন্ধসহ ১৫৬টি পরিবারকে স্বাবলম্বী হওয়ার পথ করে দিয়েছে দেশের বৃহত্তম এই সংস্থাটি।

বন্দবেড় ইউনিয়নের জয়নব আক্তার বলেন, আমার পরিবারের অ-সচ্ছলতার জন্য আমার পরিার আমাকে বিয়ের জন্য চাপ প্রয়োগ করলেও আমি রাজি না হয়ে আমার পরিবার কে বুঝাতে থাকি এক সময় আমি আমর পরিবার কে বোঝাতে সক্ষম হই এবং আমি আমার বাল্য বিয়ে বন্ধ করি। সিএনবি প্রকল্প আমার চোখ খুলে দিয়েছে। কারণ আমি যেদিন  আরডিআরএস ক্যাম্পাসে সিএনবি প্রকল্পের মাধ্যমে ব্রেভ গার্লস প্রশিক্ষনে অংশ নিই, সেদিনই আমি শপথ করি, এবং রৌমারী উপজেলাকে বাল্য বিবাহ বন্ধে নিরলস ভাবে আমরা গ্রুপ ওয়ারী কাজ করে যাচ্ছি। এবং আমরা সবাই একদিন এ উপজেলা কে বাল্য বিবাহ মুক্তসহ পরিবর্তনের হাতিয়ার হিসেবে নিজেদেরকে গড়ে তুলবো।

রৌমারী উপজেলার যাদুরচর ইউনিয়নে একেবারে প্রত্যন্ত অঞ্চলে বাস করেন চায়না বেগম। তার দুই মেয়ে কিছুটা মানসিক প্রতিবন্ধী হওয়ায় স্বামী জাকির হোসেন তাকে দুই মেয়েসহ প্রায় ১৬ বছর আগে ডিফোর্স দিয়ে দেয়। পরে তার দুই মেয়েকে নিয়ে চলে আসেন বাবার বাড়ী তার পরে দুই প্রতিবন্ধী মেয়ে কে নিয়ে চলে তিন বেলা ভাত জোটানোর যুদ্ধ এক পর্যায়ে অন্যের বাড়িতে ঝিয়ের কাজ করে কোনো রকমে জীবনযুদ্ধে টিকে ছিল এ পরিবারটি। তবে ২০২৩ সালে চাইল্ড, নট ব্রাইড (সিএনবি) প্রকল্পের জরিপের আওতায় আসে এ পরিবারটি। পরে আরডিআরএস বাংলাদেশ ও চাইল্ড, নট ব্রাইড (সিএনবি) এর প্রকল্পর মাধ্যমে গরু, ছাগল ও হঁাস-মুরগীর প্রশিক্ষণ দেওয়া হয়। পরে এ পরিবারটিকে স্বাবলম্বী করতে ১৬ হাজার টাকা দিয়ে দুইটি ছাগল ও ছয়টি মুরগীসহ প্রয়োজনীয় কিছু আসবাবপত্র কিনে দেওয়া হয়। এগুলো সে হাতে পেয়ে আনন্দে চোখে জল আসে চায়নার।  এই সামান্য সঞ্চয় পেয়ে খুলে যায় তার ভাগ্য। তার পরে তাকে আর ফিরে তাকাতে হয়নী পিছনে।  বর্তমানে বাবার দেওয়া ২ শতাংশ জায়গায় দুই মেয়েকে নিয়ে বসবাস করছেন চায়না বেগম। মেয়ে ফাতেমা, ফারজানা জরাজীর্ণ কন্ঠে আক্ষেভ করে বলেন, বাবা থেকেউ নেই, মা সহ তিন সদস্যের পরিবার আমরা থাকি খুবই জরাজীর্ণ একর্টি দুচালা টিনের ঘরে। আমাদের লেখাপড়া বন্ধছিলো তবে চাইল্ড, নট ব্রাইড (সিএনবি) এর প্রকল্পর মাধ্যমে আমাদের ভাগ্য খুলে যায়। বর্তমানে আমরা দুই বোন জামিয়া ইসলামিয়া মিফতাহুল জান্নাদ মহিলা মাদ্রাসায় দাওরায় (বিএ) পড়ি। আগেআমাগরে না খেয়ে থাকলেও এখন চাইল্ড, নট ব্রাইড (সিএনবি) এর অর্থে এখন আমাদের আর না খেয়ে থাকতে হয় না। আমরাও এখন পুষ্টিকর খাবার খাইতে পারি। এ প্রকল্পটি সুধু আমাদেরই না আমাদের মতো অনেকেরই ভাগ্য বদলিয়ে দিয়েছে এই চাইল্ড, নট ব্রাইড (সিএনবি)।

চাইল্ড নট ব্রাইড (সিএনবি) এর প্রকল্পর উপজেলা সমন্বয়কারী আব্দুল্লাহ আল মামুন বলেন, রৌমারী উপজেলাকে বাল্য বিবাহ মুক্ত করাসহ অসহায় পরিবারদেরকে স্বাবলম্বী করতে তাদের পাশে দাঁড়িয়েছে চাইল্ড, নট ব্রাইড (সিএনবি)। এতেকরে তৈরি হয়েছে অনেক নতুন জীবনের গল্প। খুলে দিয়েছে অনেক অসহায়ের স্বপ্নের দুয়ার। এই পরিবারগুলো স্বাবলম্বী হয়ে নিজেদের সন্তানদের মানুষের মতো মানুষ করবে। তাদের সন্তানরা দেশ ও মানুষের কল্যাণে কাজ করবে, যেই শ্লোগান নিয়ে এগিয়ে যাচ্ছে এই সংস্থাটি।