Dhaka ০৩:৪২ পূর্বাহ্ন, রবিবার, ২০ জুলাই ২০২৫, ৪ শ্রাবণ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ
শিরোনামঃ
সড়কে ঝরলো প্রাণ, ট্রলির নিচে পিষ্ট হয়ে বৃদ্ধের মৃত্যু জামায়াত আমীরকে দেখতে হাসপাতালে খেলাফত মজলিসের শীর্ষ নেতৃবৃন্দ জামায়াত আমীরকে দেখতে হাসপাতালে ছুটে গেলেন ইসলামী আন্দোলনের নেতারা চিকিৎসা নয়, আগে জাতির কথা— ড.শফিকুর রহমান শহীদদের স্মরণে গণতান্ত্রিক আন্দোলনের শপথ নিলো নরসিংদী বিএনপি দীর্ঘ ৫ ঘন্টা পর অবরোধ প্রত্যাহার করলেন ইবি শিক্ষার্থীরা বগুড়ায় পুত্রবধূ ও শ্বশুর হত্যাকাণ্ডের প্রধান আসামি র‍্যাবের জালে OHCHR মিশন আসছে বাংলাদেশে:জাতিসংঘের সঙ্গে তিন বছরের চুক্তি তারেক রহমানকে কটাক্ষের প্রতিবাদে নরসিংদীতে যুবদলের বিক্ষোভ ও হুঁশিয়ারি সাজিদের মৃত্যুর সুষ্ঠু তদন্ত দাবিতে শিবিরের টর্চ লাইট মিছিল
নোটিশঃ
প্রিয়" পাঠকগণ", "শুভাকাঙ্ক্ষী" ও প্রতিনিধিদের উদ্দেশ্যে জানানো যাচ্ছে:- কিছুদিন যাবত কিছু প্রতারক চক্র দৈনিক ক্রাইম তালাশ এর নাম ব্যবহার করে প্রতিনিধি নিয়োগ ও বিভিন্ন প্রলোভন দেখিয়ে অর্থ হাতিয়ে নিচ্ছে। তার সাথে একটি সক্রিয় চক্র সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে বিভিন্ন গ্রুপ বিভিন্ন ভাবে "দৈনিক ক্রাইম তালাশ"কে হেয় প্রতিপন্ন করার চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে। মনে রাখবেন "দৈনিক ক্রাইম তালাশ" এর অফিসিয়াল পেজ বা নিম্নের দুটি নাম্বার ব্যাতিত কোন রকম লেনদেনে জড়াবেন না। মোবাইল: 01867329107 হটলাইন: 01935355252

লক্ষ্মীপুরে আলোচিত: কে এই বিএনপি নেতা শহীদ সোলেমান উদ্দিন জিসান?

  • Reporter Name
  • Update Time : ১২:১৯:৫৭ অপরাহ্ন, শনিবার, ৫ জুলাই ২০২৫
  • ৮৩ Time View

আরিফুর রহমান তীব্র–লক্ষ্মীপুর সদর◼️

 

লক্ষ্মীপুর জেলা ছাত্রদলের নেতা শহীদ সোলেমান উদ্দিন জিসান—একটি পরিচিত নাম এখন জেলা রাজনীতির মাঠে। কিন্তু কে এই জিসান? কেমন ছিল তার শৈশব, পরিবার ও রাজনৈতিক পথচলা? এসব প্রশ্নের উত্তর খুঁজতেই ফিরতে হয় কিছুটা অতীতে।

পরিবারের দিক থেকে শহীদ সোলেমান উদ্দিন জিসান ছিলেন একটি শিক্ষিত ও সরকারি চাকুরিজীবী পরিবারে বেড়ে ওঠা সন্তান। তার বাবা কর্ম কমিশন সচিবালয়ের একজন সরকারি কর্মকর্তা ছিলেন। বড় জেঠা অডিট অধিদপ্তরের সহকারী সুপার, ছোট চাচা বাংলাদেশ বিমানের কাস্টমস অফিসার এবং মেঝো জেঠা পারিবারিক সম্পত্তি দেখাশোনা করতেন। পরিবারটি মূলত রাজনীতিকে একপ্রকার এড়িয়ে চলত।

তবে জিসানের রাজনৈতিক পথচলা শুরুতেই পরিবারে অস্বস্তি তৈরি করে। রাজনীতিতে সক্রিয় হওয়ার পর কিছুদিন পরিবার থেকে দূরত্ব তৈরি হলেও সময়ের সঙ্গে সবই স্বাভাবিক হয়।

১৯৯৪ সালে তার বাবার মৃত্যু হয়। পেনশনের টাকা দিয়ে এক টুকরো ঘর তৈরি করেন জিসান। সে ঘর ছিল বিএনপির রাজনীতির জন্য একটি অস্থায়ী মিলনকেন্দ্র। সেই সময় স্থানীয় বিএনপির নেতারা, যেমন আনোয়ার হোসেন বাচ্চু, হান্নান, ফারুক, ইউসুফসহ অনেকেই জিসানের মায়ের হাতে রান্না করা ভাত খেয়েছেন—এমন স্মৃতি এখনো বহুজনের মুখে মুখে।

১৯৯৬ সালে ক্ষমতায় আসে আওয়ামী লীগ সরকার। শুরু হয় বিএনপি নেতাকর্মীদের ওপর দমন-পীড়ন। জিসানও সেই সময় প্রতিবাদী হয়ে ওঠেন। অভিযোগ রয়েছে, সেই সময় স্থানীয় একদল আওয়ামী সমর্থক ও তাহের বাহিনী মিলে জিসানের বাড়িতে আগুন দেয়, বাড়িঘর জ্বালিয়ে দেয়।

পরে চন্দ্রগঞ্জ বাজারে প্রকাশ্যে মারধরের পর তাকে পুলিশের হাতে তুলে দেওয়া হয়। প্রায় ছয় মাস জেল খাটেন তিনি। এরপর আরও একাধিকবার গ্রেফতার ও নির্যাতনের শিকার হন বলে দাবি বিএনপি নেতাকর্মীদের।

১৯৯৯ সালে ঢাকা বিএনপি অফিসের সামনে থেকে ফের গ্রেফতার হন জিসান ও তার সঙ্গীরা। এরপর শুরু হয় চার বছরের কারাবরণ। ২০০২ সালে মুক্তি পাওয়ার পর তাকে গণসংবর্ধনা দেওয়া হয়। সেই সংবর্ধনায় উপস্থিত ছিলেন সহস্রাধিক নেতাকর্মী। পরে তার বিবাহোৎসবেও যোগ দেন কেন্দ্রীয় ও স্থানীয় রাজনৈতিক নেতারা।

পরিবারের যারা একসময় রাজনীতিকে ঘৃণা করতেন, তারাই পরবর্তীতে জিসানের জনপ্রিয়তা দেখে গর্ববোধ করতে শুরু করেন। জিসানের রাজনৈতিক পথচলা ছিল কণ্টকাকীর্ণ, কিন্তু ত্যাগ-তিতিক্ষা দিয়ে তৈরি সেই পথ তাকে দিয়েছে পরিচিতি ও নেতৃত্বের স্থায়ী আসন।

তবে তার বিরুদ্ধে কোনো ধরনের অপরাধ, অনিয়ম বা বিতর্কিত কর্মকাণ্ডের অভিযোগ পাওয়া যায়নি। রাজনৈতিক নেতাকর্মীদের সঙ্গে সুসম্পর্ক বজায় রেখে, দুঃসময়ে পাশে দাঁড়িয়ে এবং ত্যাগের রাজনীতি করে তিনি অর্জন করেছেন নেতাকর্মীদের আস্থা।

Write Your Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Save Your Email and Others Information

About Author Information

Popular Post

সড়কে ঝরলো প্রাণ, ট্রলির নিচে পিষ্ট হয়ে বৃদ্ধের মৃত্যু

লক্ষ্মীপুরে আলোচিত: কে এই বিএনপি নেতা শহীদ সোলেমান উদ্দিন জিসান?

Update Time : ১২:১৯:৫৭ অপরাহ্ন, শনিবার, ৫ জুলাই ২০২৫

আরিফুর রহমান তীব্র–লক্ষ্মীপুর সদর◼️

 

লক্ষ্মীপুর জেলা ছাত্রদলের নেতা শহীদ সোলেমান উদ্দিন জিসান—একটি পরিচিত নাম এখন জেলা রাজনীতির মাঠে। কিন্তু কে এই জিসান? কেমন ছিল তার শৈশব, পরিবার ও রাজনৈতিক পথচলা? এসব প্রশ্নের উত্তর খুঁজতেই ফিরতে হয় কিছুটা অতীতে।

পরিবারের দিক থেকে শহীদ সোলেমান উদ্দিন জিসান ছিলেন একটি শিক্ষিত ও সরকারি চাকুরিজীবী পরিবারে বেড়ে ওঠা সন্তান। তার বাবা কর্ম কমিশন সচিবালয়ের একজন সরকারি কর্মকর্তা ছিলেন। বড় জেঠা অডিট অধিদপ্তরের সহকারী সুপার, ছোট চাচা বাংলাদেশ বিমানের কাস্টমস অফিসার এবং মেঝো জেঠা পারিবারিক সম্পত্তি দেখাশোনা করতেন। পরিবারটি মূলত রাজনীতিকে একপ্রকার এড়িয়ে চলত।

তবে জিসানের রাজনৈতিক পথচলা শুরুতেই পরিবারে অস্বস্তি তৈরি করে। রাজনীতিতে সক্রিয় হওয়ার পর কিছুদিন পরিবার থেকে দূরত্ব তৈরি হলেও সময়ের সঙ্গে সবই স্বাভাবিক হয়।

১৯৯৪ সালে তার বাবার মৃত্যু হয়। পেনশনের টাকা দিয়ে এক টুকরো ঘর তৈরি করেন জিসান। সে ঘর ছিল বিএনপির রাজনীতির জন্য একটি অস্থায়ী মিলনকেন্দ্র। সেই সময় স্থানীয় বিএনপির নেতারা, যেমন আনোয়ার হোসেন বাচ্চু, হান্নান, ফারুক, ইউসুফসহ অনেকেই জিসানের মায়ের হাতে রান্না করা ভাত খেয়েছেন—এমন স্মৃতি এখনো বহুজনের মুখে মুখে।

১৯৯৬ সালে ক্ষমতায় আসে আওয়ামী লীগ সরকার। শুরু হয় বিএনপি নেতাকর্মীদের ওপর দমন-পীড়ন। জিসানও সেই সময় প্রতিবাদী হয়ে ওঠেন। অভিযোগ রয়েছে, সেই সময় স্থানীয় একদল আওয়ামী সমর্থক ও তাহের বাহিনী মিলে জিসানের বাড়িতে আগুন দেয়, বাড়িঘর জ্বালিয়ে দেয়।

পরে চন্দ্রগঞ্জ বাজারে প্রকাশ্যে মারধরের পর তাকে পুলিশের হাতে তুলে দেওয়া হয়। প্রায় ছয় মাস জেল খাটেন তিনি। এরপর আরও একাধিকবার গ্রেফতার ও নির্যাতনের শিকার হন বলে দাবি বিএনপি নেতাকর্মীদের।

১৯৯৯ সালে ঢাকা বিএনপি অফিসের সামনে থেকে ফের গ্রেফতার হন জিসান ও তার সঙ্গীরা। এরপর শুরু হয় চার বছরের কারাবরণ। ২০০২ সালে মুক্তি পাওয়ার পর তাকে গণসংবর্ধনা দেওয়া হয়। সেই সংবর্ধনায় উপস্থিত ছিলেন সহস্রাধিক নেতাকর্মী। পরে তার বিবাহোৎসবেও যোগ দেন কেন্দ্রীয় ও স্থানীয় রাজনৈতিক নেতারা।

পরিবারের যারা একসময় রাজনীতিকে ঘৃণা করতেন, তারাই পরবর্তীতে জিসানের জনপ্রিয়তা দেখে গর্ববোধ করতে শুরু করেন। জিসানের রাজনৈতিক পথচলা ছিল কণ্টকাকীর্ণ, কিন্তু ত্যাগ-তিতিক্ষা দিয়ে তৈরি সেই পথ তাকে দিয়েছে পরিচিতি ও নেতৃত্বের স্থায়ী আসন।

তবে তার বিরুদ্ধে কোনো ধরনের অপরাধ, অনিয়ম বা বিতর্কিত কর্মকাণ্ডের অভিযোগ পাওয়া যায়নি। রাজনৈতিক নেতাকর্মীদের সঙ্গে সুসম্পর্ক বজায় রেখে, দুঃসময়ে পাশে দাঁড়িয়ে এবং ত্যাগের রাজনীতি করে তিনি অর্জন করেছেন নেতাকর্মীদের আস্থা।