মোঃ সাদেকুল ইসলাম,লালমনিরহাট প্রতিনিধি:
আওয়ামীলীগের বিক্ষোভ।বিএনপির অস্থায়ী কার্যালয়ে আগুন
বিএনপির ডাকা হরতালে লালমনিরহাটে জাহাঙ্গীর আলম(৪৮)নামের এক শ্রমিক লীগ নেতা নিহত হয়েছেন। আহত হয়েছেন উভয় দলের কমপক্ষে ১০ জন।
বিএনপির আদিতমারী উপজেলা কার্যালয় ভাংচুর করে বিক্ষোভ করে আওয়ামীলীগের নেতা কর্মীরা।এসময়বেশ কয়েকটি মোটর সাইকেল ভাংচুরের ঘটনা ও জেলা বিএনপির মিশন মোড়স্থ অস্থায়ী কার্যালয়ে অগ্নিসংযোগের ঘটনা ঘটে।অনাকাঙ্ক্ষিত এসব ঘটনায় জেলা জুড়ে থমথমে অবস্থা বিরাজ করছে।পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে স্পর্শকাতর এলাকা গুলোতে মোতায়েন করা হয়েছে অতিরিক্ত পুলিশ।
হরতালের শুরুতেই জেলা শহর সহ বিভিন্ন এলাকায় বিক্ষোভ ও সমাবেশ এর চেষ্টা করে বিএনপি ও অঙ্গ সংগঠনের নেতা কর্মীরা।আইন শৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যারা পরিস্থিতি স্বাভাবিক রাখতে সোচ্চার থাকলেয় বেশ কয়েকটি বিচ্ছিন্ন ও অনাকাঙ্ক্ষিত ঘটনা ঘটে।
সকালে আনুমানিক সাড়ে ৯ রার দিকে শহরের মিশন মোড়ে পিকেটিং এর চেষ্টা করে বিএনপির নেতা কর্মীরা। পুলিশের বাধায় তারা পিছু হটলেয় থমথমে অবস্থা বিরাজ করতে থাকে।
এঅবস্থায় সদর উপজেলার মহেন্দ্র নগর বাজার সংলগ্ন ইউনিয়ন বিএনপি কার্যালয়ে সমবেত হতে নেতা কর্মীরা।তারা বিক্ষোভ সহ মুল সড়ক হয়ে বুড়ির বাজারের দিকে অগ্রসর হবার সময় আনুমানিক দেড়টায় আওয়ামিলীগ এর নেতা কর্মিদের সাথে ধাওয়া পাল্টা ধাওয়া ও সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে।
এতে আওয়ামীলীগের উভয় দলের বেশ কয়েকজন আহত হয়।বিএনপির কর্মীদের ধারালো অস্ত্রের আঘাতে আহত হয়।আহতদের মধ্যে ইউনিয়ন যুবলীগের সাবেক নেতা ও মহেন্দ্র নগর সরকারী বাফার গোডাউনের নোড আনলোড শ্রমিক লীগের সাধারণ সম্পাদক জাহাঙ্গীর আলম(৪৮),ইউনিয়ন আওয়ামিলী সেচ্ছা সেবক লীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক রাজু(৩৫) ও আওয়ামী লীগ নেতা বাবলু ধারালো অস্ত্রের কোপে গুরুতর জখম হয়।
আশংকাজনক অবস্থায় তাদের লালমনিরহাট সদর হাসপাতালে নেয়ার পর প্রাথমিক চিকিৎসা দিয়ে তাদের পাঠানো রংপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে। সেখানে নেয়ার পথেই মারা যায় জাহাঙ্গীর আলম। গুরুতর আহত অন্য দুজনকে উন্নত চিকিৎসার জন্য পাঠানো হয় ঢাকায়।
অপর দিকে দুপুরে বিএনপির নেতা কর্মীরা আদিতমারী উপজেলা দলীয় কার্যালয়ে সমবেত হতে থাকলে আওয়ামিলীগ এর নেতা কর্মীরা হামলা চালিয়ে কার্যালয়টিতে ব্যাপক ভাংচুর চালায়।পুলিশ হস্তক্ষেপে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আসে।
পরে আদিতমারী উপজেলা আওয়ামীলীগের সাধারন সম্পাদক রফিকুল আলম এর নেতৃত্ব শোডাউন করে তারা।উপজেলা সদরের মুল সড়ক প্রদক্ষিণ শেষে দলীয় কাী্যালয়ে এক শান্তি সমাবেশ করে নেতা কর্মীরা।
তারা বলেন আওয়ামীলীগ শান্তিতে বিশ্বাসী ও রাজনৈতিক কর্মকান্ড স্বাভাবিক ভাবেই পরিচালনা করছে।অনাকাঙ্ক্ষিত ঘটনার জন্য মাসুল দিতে হবে বিএনপিকে।
এছাড়াও জেলার বিভিন্ন এলাকায় উভয় দলের নেতা কর্মীরা পিকেটিং করে।এসময় ৪ টি মোটরসাইকেল ভাংচুরের ঘটনা ছাড়া বড় ধরনের অনাকাঙ্ক্ষিত তেমন কিছু ঘটেনি আইন শৃঙ্খলা বাহিনীর তৎপরতার কারনে।
এছাড়াও শ্রমিক লীগ নেতা জাহাঙ্গীর আলম কে হত্যার প্রতিবাদে বিকেলে লালমনিরহাটের মিশন মোড় ও কালীগঞ্জে সমাবেশ ও বিক্ষোভ মিছিল করে ছাত্রলীগের নেতা কর্মীরা।
বিকেল ৫ টায় জেলা শহরের বিডিআর গেট এলাকায় প্রতিবাদ সমাবেশ করে আওয়ামী লীগ ও অঙ্গসংগঠনের নেতা কর্মীরা। সমাবেশ জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ও জেলা পরিষদ চেয়ারম্যান এ্যাডভোকেট মতিয়ার রহমান বক্তৃতা করেন। লালমনিরহাট সহ সারাদেশে বিশৃঙ্খল পরিস্থিতির সৃষ্টি ও নেতা কর্মিদের হত্যার বিচার এই বাংলার মাটিতেই হবে শেক হাসিনার নেতৃত্বে।তিনি হুশিয়ারী উচ্চারণ করে বলেন আরো বলেন জাহাঙ্গীর আলম হত্যার ঘটমায় জড়িতদের আইনের আওতায় এনে বিচার করা হবে।
সন্ধার ঠিক আগে আওয়ামীলীগ ও অঙ্গ সংগঠনের কতিপয় সদস্য ও সমর্থকেরা জেলা বিএনপির মিশন মোড়স্থ অস্থায়ী কার্যালয়ে আগুন দেয় ও আসবাব পত্র ভাংচুর করে।এসময় দমকল বাহিনীর সদস্য এনে আগুন নিয়ন্ত্রণে আনে।এসব ঘটনায় লালমনিরহাটে থমথমে অবস্থা বিরাজ করছে।