শেরপুর প্রতিনিধি: শেরপুর জেলার ঝিনাইগাতী উপজেলায় শাহ আলম (৪০) নামে এক অটোরিকশা চালককে হত্যা করে অটোরিকশা ছিনতাইয়ের ২৪ ঘন্টার মধ্যেই ঘটনায় জড়িত ২ আসামিকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ।
গ্রেফতারকৃতরা হচ্ছে গাজীপুরের জয়দেবপুর উপজেলার ইটাহাটা গ্রামের শাহজাহান মিয়ার ছেলে মো. সবুজ মিয়া (৩৮) ও শেরপুরের ঝিনাইগাতী উপজেলার ছোট মালিঝিকান্দা গ্রামের আব্দুর রহিমের ছেলে মোঃ রূপন (২১)। তারা দুজনই সরাসরি শাহ আলমকে হত্যা করে ইজিবাইক ছিনতাইয়ের সাথে জড়িত। ৯ অক্টোবর( সোমবার) দুপুরে পুলিশ সুপারের কার্যালয়ের সম্মেলন কক্ষে আয়োজিত এক প্রেস ব্রিফিংয়ে ওই তথ্য জানান শেরপুর জেলার পুলিশ সুপার মোনালিসা বেগম পিপিএম-সেবা।
প্রেস ব্রিফিংয়ে জানানো হয়, গত ৭ অক্টোবর শনিবার রাতে শ্রীবরদী উপজেলার গোশাইপুর ইউনিয়নের ধাতুয়া আড়ালেকান্দা গ্রামের জসিম উদ্দিন ফকিরের ছেলে শাহ আলম তার ব্যাটারিচালিত ইজিবাইক চালাতে বের হয়ে নিখোঁজ হন। পরদিন রবিবার সকালে ঝিনাইগাতী উপজেলার কুচনীপাড়া এলাকার একটি ধানক্ষেতের পানিতে শাহ আলমের লাশ পাওয়া যায়। ওইসময় লাশের গলায় রশি দিয়ে পেঁচানো ছিল। ওই ঘটনায় অজ্ঞাতনামা ব্যক্তিদের আসামি করে ঝিনাইগাতী থানায় একটি হত্যা মামলা দায়ের করেন নিহতের স্ত্রী মোছা. মোর্শেদা বেগম। ঘটনার পর থেকেই পুলিশ হত্যাকাণ্ডে জড়িতদের শনাক্ত ও গ্রেফতারে তৎপরতা শুরু করে। এক পর্যায়ে সমন্বিত অভিযানে ছিনতাই হওয়া ইজিবাইকটি ঝিনাইগাতী উপজেলার বালিয়াচণ্ডি পশ্চিমপাড়া গ্রাম থেকে উদ্ধার করা হয় এবং তথ্য-প্রযুক্তির সহায়তায় ও গোয়েন্দা তথ্যের ভিত্তিতে ঘটনায় জড়িত মো. সবুজ মিয়া ও মো. রূপন মিয়াকে গ্রেফতার করা হয়। সোমবার দুপুরে তাদের আদালতে সোপর্দ করা হবে এবং বিকেলে ১৬৪ ধারায় স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি গ্রহণ করা হবে।
পুলিশ সুপার মোনালিসা বেগম পিপিএম জানান, নিহত শাহ আলম ১৫/২০ আগে কিস্তিতে একটি ব্যাটারিচালিত ইজিবাইক কিনে চালিয়ে আসছিলেন। গত ৭ অক্টোবর রাতে শাহ আলম ইজিবাইক চালাতে বের বের হরে আসামি মো. সবুজ মিয়া ও মো. রূপন শাহ আলমের ইজিবাইকটি ছিনতাই করার জন্য পরিকল্পনা করে। সে মোতাবেক রাত ৮টার দিকে কুচনীপাড়া বাজার থেকে ৫০০ টাকায় শাহ আলমের গাড়িটি ভাড়ায় নিয়ে বিভিন্ন জায়গায় ঘুরাফেরা করে নির্জন জায়গা খুঁজতে থাকে সবুজ মিয়া ও রূপন। একপর্যায়ে কুচনীপাড়া এলাকায় আসামি সবুজ মিয়া ইজিবাইকের পেছনে বসে এবং রূপন ইজিবাইকের সামনের বাম পাশের সিটে বসে। পরে কুচনীপাড়া বাজারের দিকে যাওয়ার সময় সবুজ মিয়া ও রূপন দুজনেই শাহ আলমের গলায় নাইলনের রশি দিয়ে পেঁচিয়ে শ্বাসরোধ করে হত্যা করে পাশের ধানক্ষেতের পানিতে ফেলে দেয়। সেইসাথে ইজিবাইকটি নিয়ে বিক্রির চেষ্টা করে ব্যর্থ হয়ে বিভিন্ন জায়গায় ঘুরাফেরা করে কোন উপায় না পেয়ে ঝিনাইগাতীর বালিয়াচণ্ডি পশ্চিমপাড়া এলাকায় ফেলে রেখে চলে যায়।
প্রেস ব্রিফিংয়ে অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (প্রশাসন ও অর্থ) মোহাম্মদ ফখরুজ্জামান জুয়েল, অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (ক্রাইম এন্ড অপস্) খোরশেদ আলম, অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (সদর সার্কেল) মো. সাইদুর রহমান, সহকারী পুলিশ সুপার (নালিতাবাড়ী সার্কেল) দিদারুল ইসলাম, প্রেসক্লাব সভাপতি রফিকুল ইসলাম আধার, সাধারণ সম্পাদক আদিল মাহমুদ উজ্জল, সাবেক সাধারণ সম্পাদক মেরাজ উদ্দিন, ঝিনাইগাতী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মো. মনিরুল আলম ভূঁইয়া, ডিআইও-১ জাহাঙ্গীর আলমসহ জেলায় কর্মরত গণমাধ্যমকর্মীরা উপস্থিত ছিলেন।