
মোঃ হারুন অর রশিদ রিপন,শেরপুরের প্রতিনিধিঃ স্মার্ট যুব, সমৃদ্ধ দেশ, বঙ্গবন্ধুর বাংলাদেশ’-এ প্রতিপাদ্য নিয়ে শেরপুরে জাতীয় যুব দিবস পালিত হয়েছে। এ উপলক্ষে ১ নভেম্বর বুধবার সকাল সাড়ে ১০টায় শেরপুর জেলা প্রশাসন ও জেলা যুব উন্নয়ন অধিদপ্তরের আয়োজনে আলোচনা সভা, যুব ঋণের চেক ও সনদপত্র বিতরণ করা হয়।
এর আগে যুব ভবনের মেইন গেট থেকে ভেতরে প্রশাসনিক ভবন পর্যন্ত দুই পাশে প্রশিক্ষণার্থীরা হাতে ফুলের ডালা নিয়ে লাইনে দাঁড়িয়ে থাকেন। পরে সেখানে প্রধান অতিথি জেলা প্রশাসক আব্দুল্লাহ আল খায়রুম এসে পৌঁছালে যুব উন্নয়ন অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক মো. নুরুজ্জামান চৌধুরীসহ অন্যান্য কর্মকর্তা ও প্রশিক্ষণার্থীরা তাকে ফুলের তোড়া এবং ফুল ছিটিয়ে শুভেচ্ছা জানান।
অপরদিকে যুব ভবনের সম্মেলন কক্ষে যুব উন্নয়ন অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক মো. নুরুজ্জামান চৌধুরী সভাপতিত্বে ও সদর উপজেলা যুব উন্নয়ন কর্মকর্তা মো: হামিদুর রহমানের সঞ্চালনায় এক আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হয়। এতে স্বাগত বক্তব্য রাখেন জেলা যুব উন্নয়ন অধিদপ্তরের সহকারী পরিচালক মো. মাহফুজুল হক।
অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে বক্তব্য রাখেন জেলা প্রশাসক আব্দুল্লাহ আল খায়রুম। এসময় তিনি বলেন, নয় মাসের এক রক্তক্ষয়ী সংগ্রাম শেষে আমরা এই বাংলাদেশ পেয়েছি। এই যে আমাদের দীর্ঘ ২৩ বছরের আন্দোলন-সংগ্রাম এবং পরবর্তীতে নয় মাসের রক্তক্ষয়ী যুদ্ধে ভূমিকা রেখেছে তারা কারা, কোন শ্রেণি মানুষ আপনার নিশ্চিয় একমত হবেন তারা ছিল যুবক এবং আমাদের যত ধরনের অধিকার আদায়ে আন্দোলন করেছে, সংগ্রাম করেছে তারা সকলেই যুবক। এখন আমরা স্বপ্ন দেখছি উন্নত বাংলাদেশ গড়বো। যে উন্নত বাংলাদেশ গড়ার শক্তি হবে যুবক ও যুব সমাজ। সুতরাং আমরা আমাদের যুব সমাজকে অবশ্যই সম্পদে পরিণত করবো এবং যুব সমাজকে মাদক থেকে দূরে রাখার চেষ্টা করবো। যুব সমাজ যদি মাদক থেকে দূরে রাখতে না পারি তাহলে আমাদের দেশের উন্নয়নে বাধাগ্রস্ত হবে। যুব সমাজ যাতে মাদক থেকে দূরে থাকে সেজন্য বর্তমান সরকার কাজ করে যাচ্ছে।
তিনি আরো বলেন, বর্তমান সরকার যুবক-যুবতীদের উদ্যোক্তা ও আত্মনির্ভরশীল করে তুলতে যুব উন্নয়ন অধিদপ্তরসহ বিভিন্ন দপ্তরের মাধ্যমে প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা করছে। আমার ডিজিটাল বাংলাদেশ থেকে এখন স্মার্ট বাংলাদেশের দিকে যাচ্ছি সেটার জন্য বর্তমান সরকার হাইটেক পার্ক, সফটওয়্যার টেকনোলজি পার্ক গড়ে তুলছে, শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে শেখ রাসেল ডিজিটাল ল্যাব স্থাপনসহ বাংলাদেশের গ্রামগঞ্জে ইন্টারনেট সংযোগ চলে গেছে এবং বাংলাদেশে নিজস্ব অর্থায়নে পদ্মা সেতুর মত ব্যয়বহুল প্রকল্প বাস্তবায়ন করা সম্ভব হয়েছে। তিনি আরো বলেন, এখন বাংলাদেশকে অন্যান্য দেশে উন্নয়নের রোল মডেল বলে এবং বাংলাদেশ এগিয়ে যাচ্ছে। আমাদের শেরপুর জেলার সকল যুব সমাজ যুব উন্নয়ন অধিদপ্তরের বিভিন্ন ট্রেডে প্রশিক্ষণ নিয়ে নিজেদের প্রতিষ্ঠিত করবে, নিজেদের সফল করবে এই আশাবাদ ব্যক্ত রেখে বক্তব্য শেষ করেন।
বিশেষ অতিথি হিসেবে বক্তব্য রাখেন শেরপুর পৌরসভার মেয়র আলহাজ্ব গোলাম মোহাম্মদ কিবরিয়া লিটন, অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (শিক্ষা ও আইসিটি) মোহাম্মদ রাজীব-উল-আহসান, অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (ক্রাইম এন্ড অপস্) মো. খোরশেদ আলম, সদর উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান আলহাজ্ব মো. রফিকুল ইসলাম, সদর উপজেলা পরিষদ মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান সাবিহা জামান শাপলা। এছাড়াও প্রশিক্ষণার্থীদের মধ্যে বক্তব্য রাখেন বাবুল মিয়া, ইসমত আরা।
অনুষ্ঠানের সভাপতি যুব উন্নয়ন অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক মো. নুরুজ্জামান চৌধুরী বলেন, আমাদের দেশে জনসংখ্যার সর্বাধিক অংশই যুব-যা সারাবিশ্বে অন্য কোন দেশে নেই। অপার সম্ভাবনাময় যুব শক্তিকে ব্যবহার করে বাংলাদেশ উন্নয়ন ও সমৃদ্ধির পথে এগিয়ে যাবে। এ লক্ষ্য অর্জনে সরকার যুবদের কর্মসংস্থানের জন্যে যুগোপযোগী প্রশিক্ষণ, ঋণ প্রদানসহ কার্যকর সকল পদক্ষেপ গ্রহণ করেছে।
বক্তব্য শেষে প্রধান অতিথি ও বিশেষ অতিথিগণ ৭জন যুব ও যুবাকে মাত্র পাঁচ শতাংশ সার্ভিস চার্জে ৪ লক্ষ ৪০ হাজার টাকার ঋণের চেক এবং ২০ জন প্রশিক্ষণার্থীদের মাঝে সনদপত্র বিতরণ করেন।
অনুষ্ঠানে সদর উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) ঈফফাত জাহান তুলি, জেলা প্রশাসক কার্যালয়ের সহকারি কমিশনার ও নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট এস. এম. আল-আমীন, যুব উন্নয়ন অধিদপ্তরের সহকারী পরিচালক মো. আতাহার আলী, প্রশিক্ষক (পোষাক) মারুফা আক্তার, প্রশিক্ষক (মৎস্য) মো: ছাঈদুল হক, প্রশিক্ষক (কম্পিউটার) হারুন-অর-রশীদ খান, সদর উপজেলা সহকারী ঊপজেলা যুব উন্নয়ন কর্মকর্তা , সাংবাদিক সঞ্জিব চন্দ বিল্টু, হামিদুর রহমান সহ অন্যান্য প্রশিক্ষক, কর্মকর্তা-কর্মচারী, বিভিন্ন ট্রেডে প্রশিক্ষণার্থীরা উপস্থিত ছিলেন।