সুমন,মোংলা থানা সংবাদদাতা:সুন্দরবনের অনেক প্রানী চোখের আড়াল পড়েনা চোখে তার মধ্যে বিলুপ্তির পথে বাঘও।প্রতি বছর বাঘের সংখ্যা বৃদ্ধি পায় জরিপে দেখা যায়।এবারো নতুন করে বাঘের ওপরে জরিপ চালানো হচ্ছে।
বাঘের সংখ্যা এবং সংরক্ষণে এই জরিপ কাজের আনুষ্ঠানিক উদ্ধোধন করেন পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রণালয়ের উপ মন্ত্রী বেগম হাবিবুন নাহার।
রবিবার (৫ নভেম্বর) দুপুরে বনের হাড়বাড়িয়া ইকো-ট্যুরিজম কেন্দ্র থেকে এই উদ্ধোধন করা হয়। পরে উপমন্ত্রী সাংবাদিকদের বলেন, ‘সুন্দরবন বাঁচলে বাঘ বাঁচবে। তাই সুন্দরবন সুরক্ষা করে বাঘ সংরক্ষণ করতে হবে। তাই তৃতীয়বারেরমতো বাঘ সংরক্ষণ প্রকল্পের আওতায় বাঘ গননার কাজ শুরু হয়েছে’।
এসময় উপমন্ত্রীর সাথে খুলনাঞ্চলের বন সংরক্ষক (সিএফ) মিহির কুমার দো, বাঘ সংরক্ষণ প্রকল্পের পরিচালক ড. আবু নাসের মহাসিন হোসেন, বন্য প্রাণী ব্যবস্থাপনা বিভাগের (খুলনা) বিভাগীয় বন কর্মকর্তা নির্মল কুমার পাল, সুন্দরবন পূর্ব বিভাগের বিভাগীয় বন কর্মকর্তা (ডিএফও) কাজী মোঃ নুরুল করিম, চাঁদপাই রেঞ্জের (মোংলা) সহকারী বনসংরক্ষক (এসিএফ) রানা দেব ও করমজল বন্যপ্রাণী প্রজনন ও পর্যটন কেন্দ্রের ওসি হাওলাদার আজাদ কবিরসহ বাঘ গননার কাজে বিশেষজ্ঞরা উপস্থিত ছিলেন।
পূর্ব সুন্দরবনের চাঁদপাই ও শরনখোলা রেঞ্জের আওতায় প্রাকৃতিক বনে ক্যামেরা বসিয়ে বাঘের সংখ্যা নির্ণয় করা হবে এবং সুন্দরবনে কতোগুলো বাঘ রয়েছে তার সংখ্যা আগামী বছরের ২৯ জুলাই বিশ্ব বাঘ দিবসে ঘোষণা করা হবে। এ তথ্য দিয়ে বাঘ সংরক্ষণ প্রকল্পের পরিচালক ড. আবু নাসের মহাসিন হোসেন জানান, ২০১৩-১৪ সালে প্রথমবার সুন্দরবনে বাঘ সংরক্ষণ ও জরিপ কাজ শুরু করা হয়। ২০১৫ সালে সেই জরিপে ১০৬টি বাঘ সুন্দরবনে আছে বলে জানা যায়। এরপর ২০১৮ সালে জরিপ চালিয়ে ১১৪টি বাঘের তথ্য পাওয়া যায়। এখন সে বাঘ কমেছে নাকি বেড়েছে তা জানতে নতুন করে রবিবার থেকে জরিপ চালানোর কাজ শুরু করা হয়েছে।
আগামী বছরের এপ্রিল মাসে এই জরিপ কাজ শেষ হবে উল্লেখ করে তিনি আরও জানান, সুন্দরবনের চাঁদপাই এবং শরনখোলা রেঞ্জে ৩০০টি ষ্টেশনে দুটি করে মোট ৬০০ ক্যামেরা বসিয়ে বাঘের তথ্য উপাত্ত সংগ্রহ করা হবে। পরে তা বিশ্লেষণ শেষে ২০২৪ সালের ২৯ জুলাই বিশ্ব বাঘ দিবসে বাঘের প্রকৃত সংখ্যা তুলে ধরা হবে। ‘বাঘ সংরক্ষণ প্রকল্পে’র আওতায় বাঘ গননার কাজে দুই কোটি ৭০ লক্ষ টাকা ব্যয় ধরা হয়েছে।
ড. আবু নাসের মহাাসিন জানান, ‘সুন্দরবনে বাঘের শিকার প্রাণী বাড়ছে। গত বছর এর সংখ্যা ছিল ৮২ হাজার। এখন তা বেড়ে দাড়িয়েছে এক লক্ষ ৪২ হাজার। তাই সুন্দরবনে বাঘের সংখ্যা বাড়বে বলেও ধারনা করা হচ্ছে’।
বনবিভাগ সুত্র জানায়, বাঘ গননার বৈশ্বিক যে পদ্ধতি সেটা হলো ক্যামেরা ট্রাপিং পদ্ধতি। এর মাধ্যমে বাঘের ঘনত্ব নির্ণয় করে বাঘের সংখ্যা নির্ণয় করা হয়। বাংলাদেশেও একই পদ্ধতি অনুসরণ করে ছয় হাজার বর্গ কিলোমিটারের চার হাজার ৪০০ বর্গকিলোমিটারে বাঘ গননার কাজ চালানো হবে। ক্যামেরার মাধ্যমে বাঘের মুখমন্ডল ও ডোরা কাটার ছাপ উঠে আসবে। এটা জটিল একটা পরিসংখ্যান কাজ। এ কাজ করেই বাঘের সংখ্যা বের করা হবে।