মোঃ রেজাউল করিম,ময়মনসিংহ প্রতিনিধি: গত ৯ অক্টোবর রোজ সোমবার ২০২৩ইং অনুমানিক দুপুর ১২.২০ ঘটিকায় সময় বাটাজোর বিএম উচ্চ বিদ্যালয়ে ৯ম শ্রেণীর ছাত্রী রাখিয়া সুলতানা রিয়া পরীক্ষা দেওয়ার জন্য বাড়ী থেকে বের হলে, স্কুলে যাওয়ার পথে জনৈক নুরুল ইসলামের ধানী জমির কাছে পৌঁছালে অজ্ঞাতনামা এক বা একাধিক ব্যক্তি ধাঁরালো অস্ত্র দ্বারা কুপিয়ে রিয়ার শরীরে মারাত্মক জখম করে। ভিকটিমের আর্তচিৎকার শুনে তার মা ও আশেপাশের লোকজন চলে আসলে আসামীরা দ্রুত স্থান থেকে পলায়ন করে। এবং ঘটনা স্থলে উপস্থিত সকলে ভিকটিমকে চিকিৎসার জন্য তাৎক্ষনিকভাবে নিকটস্থ ভালুকা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে গেলে কর্তব্যরত চিকিৎসক ভিকটিমকে মৃতঃ ঘোষণা করেন। কর্তব্যরত ডাক্তাররা জানান, আনার পথে কিংবা ঘটনা স্থলে মৃত্যু হয়েছে। এ ঘটনায় ভিকটিমের বাবা বাদী হয়ে ভালুকা মডেল থানায় একটি হত্যা (মামলা নং-১৬, তাং-১০/১০/২০২৩ ইং, ধারা-৩০২/৩৪ পেনাল কোড-১৮৬০) মামলা দায়ের করেন।
ময়মনসিংহ জেলার গফরগাঁও-এর সার্কেলের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার জনাব আফরোজা নাজনীনের তত্ত্বাবধানে। ভালুকা মডেল থানার অফিসার ইনচার্জ জনাব মো: কামাল হোসেনের নেতৃত্বে পুলিশ পরিদর্শক(তদন্ত) জনাব মোঃ জাহাঙ্গীর আলম, এসআই(নিঃ) মোঃ কাজল হোসেন, এসআই(নিঃ) আবুল কালাম আজাদ, এসআই(নিঃ) মোঃ নজরুল ইসলাম, এসআই(নিঃ) খন্দকার আল রাজী ও সঙ্গীয় অফিসার একটি অভিযানিক টিম গাজীপুর,নারায়নগঞ্জ ও টাঙ্গাইল জেলার বিভিন্ন স্থানে অভিযান পরিচালনা করে মামলা রুজুর ৭২ ঘন্টার মধ্যে আজ সকাল ১০:৩০মিনিটে সময় টাঙ্গাইল জেলার মির্জাপুর থানা এলাকা হতে ঘটনায় জড়িত আসামী রিপন মিয়া (২৯)বছর,পিতা-মানিক মিয়া, ঠিকানা- ছিলিমপুর, সখিপুর, টাঙ্গাইল-থেকে গ্রেফতার করতে সক্ষম হয়েছে।
প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে জানা যায় যে, আসামী মোঃ রিপন মিয়া (২৯)বছর গত এক বছর আগে ভিকটিম রাখিয়া সুলতানা রিয়া’র সাথে ইসলামী শরিয়া মোতাবেক বিবাহ বন্ধনে আবদ্ধ হয়। এবং বিয়ের ১৫ দিন পর আসামী সৌদি আরব চলে যায়। কিছু দিন পর রিয়া আর সংসার করবে না বলে জানিয়ে তার পরিবারকে বিয়েতে ধার্যকৃত কাবিন হিসেবে নির্ধারিত ৮,০০,০০০/- (আট লক্ষ) টাকা দিয়ে দিতে বলে। ভিকটিম রিয়াও তার স্বামীর সাথে যোগাযোগ বন্ধ করে দেয়।
এক পর্যায়ে স্বামী রিপন মিয়া ভিকটিমের স্কুলের সহপাঠীদের মাধ্যমে জানতে পারে যে, সে অন্য একজনের সাথে প্রেমের সম্পর্ক গড়ে তুলেছে। এতে আসামী ক্ষিপ্ত হয়ে সকলের অজান্তে গত ২ অক্টোবর ২০২৩ইং সৌদি আরব থেকে বাংলাদেশে চলে আসে এবং টাঙ্গাইল জেলার সখিপুর থানা এলাকায় অবস্থান করে। ঘটনার আগের দিন ৮ অক্টোবর ২০২৩ইং সকাল ১১.০০ ঘটিকায় সময় সে বাটাজোর বিএম উচ্চ বিদ্যালয়ের গেটে ভিকটিম রিয়াকে অন্য একটি ছেলের সাথে দেখতে পেলে এবং পরদিন সখিপুর বাজার থেকে একটি ধাঁরালো দা ক্রয় করে ভিকটিমের স্কুলে আসা-যাওয়ার পথে সুবিধাজনক স্থানে অপেক্ষা করতে থাকে এবং আনুমানিক দুপুর ১২.২০ ঘটিকায় সময় ভিকটিমের সাথে দেখা হওয়ামাত্র তাকে জনৈক নুরুল ইসলামের ধানক্ষেতে ফেলে হাতে থাকা ধারালো দা দিয়ে মাথা ও ঘাড়সহ শরীরের বিভিন্ন স্থানে কুপিয়ে মারাত্মক জখম করে পালিয়ে যায়।
স্কুল ছাত্রী রিয়া হত্যা মামলার আসামী স্বামী রিপন মিয়ার স্বীকারোক্তিমুলক এবং আরো জবানবন্দি জন্য বিজ্ঞ আদালতে পাঠানো হয়েছে।