বাদল আহমেদ,বিশেষ প্রতিনিধি হবিগঞ্জ: পূর্ব শত্রুতার জের ধরে আপন ভাতিজির জামাই রাতে মোটরসাইকেল বাড়ি ফেরার পথিমধ্যে পথরোধ করে ইউপি সদস্যের লোকজন দেশীয় অস্ত্র দিয়ে এলোপাতারি কুপিয়ে রাস্তায় ফেলে পালিয়ে যায়।
ঘটনাটি ঘটেছে, গতকাল শুক্রবার রাত অনুমান ৮টার দিকে।
স্থানীয় সূত্রে জানাযায়, হবিগঞ্জের বানিয়াচং উপজেলা সদরের ১নং উত্তর পূর্ব ইউনিয়নের ৯নং ওয়ার্ডের মজলিসপুর গ্রামে গতকাল শুক্রবার (২৯ নভেম্বর) রাত অনুমান ৮টার দিকে মজলিসপুর গ্রামের মৃত বাছির উল্লার পুত্র নূর মোহাম্মদ মিয়া (৬৬) মোটরসাইকেল যোগে বাজার থেকে বাড়ি ফেরার পথিমধ্যে মাতাপুর মহল্লার ব্রীজ পাড় হয়ে মজলিসপুর গ্রামের ভিতরে পৌঁছা মাত্রই পূর্ব শত্রুতার জের ধরে পতিপক্ষ জামাতা ও ইউপি সদস্য মুনসুর মিয়ার লোকজন নূর মোহাম্মদ এর মোটরসাইকেল গতিরোধ করে এলোপাতাড়ি কুপিয়ে থাকে আহত করে দূবৃত্তরা পালিয়ে যায়।
এসময় তার সু-চিৎকারে আশপাশের লোকজন এগিয়ে এসে তাকে আহত অবস্থায় উদ্ধার করে বানিয়াচং স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে গেলে সেখানকার চিকিৎসক তাকে হবিগঞ্জ সদর আধুনিক হাসপাতাল প্রেরন করেন। সেখানেও তার অবস্থা আশংকাজনক দেখে কর্তব্যরত চিকিৎসক রাত সাড়ে ১১ টার দিকে সিলেট এম,এ,জি ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসাপাতালে নিয়ে খবর পাওয়া গেছে। উক্ত হামলার ঘটনায় খবর চতুদিকে চড়িয়ে পড়লে এলাকায় থমথমে অবস্থা বিরাজ করছে। দু’পক্ষের লোকজনের মধ্যে উত্তেজনা বিরাজ করছে। আবারও যেকোনো সময় রক্তক্ষয়ী সংঘর্ষের সম্ভবনা রয়েছে বলে স্থানীয়রা জানান।
এ ব্যাপারে নূর মোহাম্মদ এর লোকজন বলেন, পূর্ব শত্রুতার জের ধরে মুনসুর মেম্বার তার আপন চাচা শশুর নূর মোহাম্মদ মিয়াকে প্রাণে হত্যার উদ্দ্যেশে এ হামলা চালায়।
একটি বিশ্বস্ত সূত্র জানাযায়, একই ওয়ার্ডের সাবেক ইউপি সদস্য জালাল মোহাম্মদ মিয়ার কন্যাকে বিয়ে করেন বর্তমান ইউপি সদস্য মুনসুর মিয়া। এই বিষয়টিকে কেন্দ্র করে উভয়পক্ষের লোকজনের মধ্যে টানটান উত্তেজনা বিরাজ করছে। আজ রাত হওয়ায় আর কোন সংঘর্ষ হবেনা। তবে, সকাল বেলা সংঘর্ষ হবে যে এটা নিশ্চিত করেই বলেন অনেকেই। এই ঘটনার পর থেকে উভয় পক্ষের লোকজন দেশীয় অস্ত্র সস্ত্রে সজ্জিত হয়ে হামলার পরিকল্পনার ছক তৈরী করছেন বলেও সূত্রে জানাযায়।
এ ঘটনার সর্বশেষ এ রিপোর্ট লেখা পর্যন্ত রাত সাড়ে ১১টিকে জানাযায়, আহত নূর মোহাম্মদ মিয়াকে উদ্ধার করে প্রথমে স্থানীয় বানিয়াচং স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে যান, সেখানে তার অবস্থার অবনতি দেখে চিকিৎসক হবিগঞ্জ সদর আধুনিক হাসপাতাল প্রেরন করেন। সেখানেও নিয়ে যাওয়ার পর কর্তব্যরত ডাক্তার সাথে সাথে তাকে সিলেট এম,এ,জি ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে প্রেরন করেন।
উল্লেখ্য যে, কিছুদিন পূর্বে মজলিসপুর গ্রামের মসজিদের মুতাওয়াল্লী নিয়ে এই দুই পক্ষের লোকজনের মধ্যে কয়েক দফা সংঘর্ষ হয়। এতে উভয় পক্ষের শতাধিক নারী-পুরুষ আহত হন। পরে ঘটনাটি শালিসের মাধ্যমে বানিয়াচং উপজেলা পরিষদের হলরুমে বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর উপস্থিতিতে বিএনপির নেতৃবৃন্দ ও স্থানীয় লোকজনের উপস্থিতিতে উভয় পক্ষকে নিয়ে বিষয়টি সমাধান করা হয়েছে বলে জানাযায়। কিন্তু এ ঘটনার সমাধানের কিছুদিন পর এক পক্ষ অপর পক্ষের লোকজনের উপর পূর্বের সংঘর্ষের ঘটনায় আদালতে মামলা দায়ের করেন বলে খবর পেয়ে আসামী পক্ষের লোকজন উত্তেজিত হয়ে ওঠেন। এতে, প্রশাসন এই হামলার ঘটনাটি অবগত হওয়ার পর পরই মজলিসপুর গ্রামে সেনাবাহিনী ও থানা পুলিশের টহল টিম পর্যবেক্ষন করছে।
এ ব্যাপারে বানিয়াচং থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) কবির হোসন এর সাথে মোবাইল ফোনে
যোগাযোগ করা হলে তিনি জানান, এ ঘটনার খবর পেয়ে রাতেই আমরা পর পর কয়েকবার আমাদের থানা পুলিশ ঐ এলাকা সরেজমিনে গিয়ে টহল দিচ্ছে। এছাড়া আমিও এই মুহূর্তে পুলিশ নিয়ে মজলিসপুর গ্রামের দিকে রওয়ানা দিচ্ছি।
এ ব্যাপারে আহত নূর মোহাম্মদ মিয়ার সাথে থাকা তার পুত্র শোভন এর সাথে রাত সাড়ে ১২ টার দিকে মোবাইল ফোনে যোগাযোগ করা হলে তিনি জানান, তার পিতাকে প্রথমে বানিয়াচং উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে যান। সেখান থেকে ডাক্তার হবিগঞ্জ সদর আধুনিক হাসপাতালে নিয়ে যেতে রেফার করেন। হবিগঞ্জ সদর আধুনিক হাসপাতালে নিয়ে আসার পর আমার বাবার অবস্থার অবনতি দেখে সেখানকার ডাক্তার বাবাকে সিলেট ওসমানীতে রেফার করেন। এখন আমি আমার বাবাকে নিয়ে যাচ্ছি সিলেট ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে। আমার বাবার জন্য সবাই দোয়া করবেন।
এ ঘটনায় দুই পক্ষের লোকজনের মধ্যে টানটান উত্তেজনা বিরাজ করছে। আশপাশ এলাকার লোকজন নানান আতংকে রাত পার করছেন! তারা প্রশাসনের সু- দৃষ্টি কামনা করছেন!!