
দেলোয়ার খান–স্টাফ রিপোর্টার◼️
বর্তমান ব্যবস্থায় কখনো কখনো দেখা যায়, একটি দল ৩৩ শতাংশ ভোট পেয়েই সরকার গঠন করে, অথচ আরেকটি দল ৩৬ শতাংশ ভোট পেয়েও বিরোধী আসনে বসে। গণতন্ত্রের এই অসামঞ্জস্যতা দূর করতে বিশ্বের অনেক দেশ বেছে নিয়েছে PR বা Proportional Representation পদ্ধতি, যার বাংলা অর্থ—অনুপাতে প্রতিনিধিত্ব।
জার্মানি, নরওয়ে, অস্ট্রেলিয়া, নেপালসহ অনেক দেশেই PR পদ্ধতি চালু রয়েছে। এর মূল দর্শন খুবই সরল: যত ভোট, তত আসন।
এই পদ্ধতিতে ভোটাররা কোনো একক প্রার্থীকে নয়, ভোট দেন একটি দলকে। এরপর সেই দলের প্রাপ্ত ভোটের হার অনুযায়ী সংসদে আসন বণ্টন করা হয়।
উদাহরণ স্বরূপ ধরুন:
একটি সংসদে মোট ১০০টি আসন রয়েছে—
দল A পেয়েছে ৪০ শতাংশ ভোট, তারা পাবে ৪০টি আসন,
দল B পেয়েছে ৩০ শতাংশ ভোট, তারা পাবে ৩০টি আসন,
দল C পেয়েছে ৩০ শতাংশ ভোট, তারাও পাবে ৩০টি আসন।
এইভাবে জনগণের রায় নিখুঁতভাবে সংসদে প্রতিফলিত হয়।
PR পদ্ধতির প্রধান সুবিধাগুলো হলো:
কোনো ভোট নষ্ট হয় না,
ছোট দলগুলোরও সংসদে যাওয়ার সুযোগ থাকে,
জনগণের প্রকৃত রায় প্রতিফলিত হয়,
ক্ষমতা একক আধিপত্যে সীমাবদ্ধ না থেকে বিভাজিত থাকে।
এ পদ্ধতিতে নানা মত ও মতাদর্শকে সংসদে জায়গা দেওয়া সম্ভব হয়, যা গণতন্ত্রকে আরও অন্তর্ভুক্তিমূলক ও ভারসাম্যপূর্ণ করে তোলে।
বাংলাদেশে নির্বাচন ও গণতন্ত্রের স্বচ্ছতা নিয়ে যখন বিভিন্ন সময় প্রশ্ন উঠে, তখন PR পদ্ধতির প্রয়োজনীয়তা আরও স্পষ্ট হয়ে ওঠে। এ পদ্ধতির বাস্তবায়ন হলে সমাজের সব শ্রেণির মানুষের কণ্ঠস্বর জাতীয় সংসদে প্রতিফলিত হবে। আর এটাই গণতন্ত্রের প্রকৃত সৌন্দর্য।
দেশের ভবিষ্যৎ রাজনৈতিক স্থিতিশীলতা ও জনগণের প্রকৃত প্রতিনিধিত্ব নিশ্চিত করতে PR পদ্ধতি হতে পারে সময়ের দাবি।